চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের মো. গোলাম কুদ্দুস (৬৫) জন্ম থেকেই একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। অভাবী কৃষি পরিবারে বেড়ে ওঠা গোলাম কুদ্দুস শারীরিক প্রতিবন্ধিতাকে হার মানিয়ে সেই ছোটকাল থেকেই স্বপ্ন দেখতো, ‘কাজ করে কীভাবে সফল হওয়া যায়’। শারীরিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় এসএসসি পাশের পর উচ্চ শিক্ষার চিন্তা বাদ দিতে হয় গোলাম কুদ্দুসকে। বৃদ্ধ বয়সে অন্যের উপর নির্ভরশীল না থেকে মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে নিজের বাড়ির সাথে ছোট্ট একটা চায়ের দোকান শুরু করেন।
সৎ, পরিশ্রমী ও সদালাপী মানুষ হওয়ায় ‘প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’র আওতায় উথলী ইউনিয়ন প্রবীণ কমিটি গত ২৮ মার্চ ২০২২ গোলাম কুদ্দুসকে পিকেএসএফ এর সহায়তায় ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘সোনালী টি-স্টল’ এর বরাদ্দকৃত ১৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করে।
অনুদানের টাকার সাথে নিজের সঞ্চিত কিছু অর্থ যুক্ত করে গোলাম কুদ্দুস চায়ের দোকানে নতুন করে টিন, বাঁশ, চুলা, তারকাটা, স্ক্রু, সামনে ও পাশে মাটি ভরাট, ফ্যান, রং করা, ভাল মানের চায়ের কাপ, বিস্কুট, চিনি, কোমল পানীয়, পান-চুন-সুপারী-পান মসলাসহ অন্যান্য উপকরণ কিনে দোকানটি আগের চেয়ে পরিপাটি করে সাজান। আগের পরিচিতি ও নতুন পণ্যের সমাহারে বিক্রি বাড়তে থাকে এবং আস্তে আস্তে পুঁজি বৃদ্ধি পায়। গোলাম কুদ্দুস প্রবীণ কমিটির সদস্য হওয়ায় স্থানীয় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি উথলীর প্রবীণদের একটা বড় অংশ তার দোকানে আসে, আড্ডা দেয়, চা-বিস্কুট-পান খায়।
বর্তমানে গোলাম কুদ্দুসের দৈনিক বিক্রি প্রায় ৩থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা এবং খরচ বাদে গড়ে প্রতিদিন নীট লাভ হয় ১০০০ থেকে ১২০০ টাকা। সম্প্রতি গোলাম কুদ্দুস আগের সঞ্চিত অর্থের সাথে লাভের জমানো টাকা দিয়ে রাস্তার পাশে ৪ কাঠা জমি কিনেছেন। জমি ও দোকানের মালামালসহ এখন তার প্রায় ১০ লক্ষ টাকার সম্পদ রয়েছে। এক কথায় বলা যায়, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে জয় করে গোলাম কুদ্দুস এখন একজন সফল ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা’।