চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাটকালুগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মো. সুমন আলী। প্রচন্ড চাপ, বসের বকাবকি এবং বেতন কম হওয়ায় চাকুরি ছেড়ে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেন সুমন। গতানুগতিক কাজের বাইরে নতুন কিছু করার জন্য ইউটিউবে বিভিন্ন ভিডিও দেখতে থাকেন। চুয়াডাঙ্গা জেলাতে নেই এমন কোনো বিষয়ে ব্যবসা করার চিন্তা থেকে সুমন দুগ্ধজাত পণ্য মাঠা নিয়ে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। মূলধন কম থাকায় সুমন তার বন্ধু মাসুমকে ব্যবসার অংশীদার করার বিষয়ে ভাবতে থাকেন।
এমন সময় সুমন দুইদিনের সফরে সিরাজগঞ্জ গিয়ে মাঠা সম্পর্কে ধারণা নেন এবং কীভাবে এই মাঠা চুয়াডাঙ্গা নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে তিনজন মাঠা প্রস্তুতকারী উদ্যোক্তার সাথে কথা বলেন। এর মধ্যে একজন উদ্যোক্তা চুয়াডাঙ্গাতে মাঠা পৌঁছে দিতে রাজি হন। সব ব্যবস্থা হলেও মাঠা রাখার জন্য প্রয়োজন হয় চিলিং মেশিন। দুই বন্ধুর সকল টাকা মিলিয়ে কেনা হয় একটি চিলিং মেশিন। ব্যবসা শুরুর সব প্রস্তুতি যখন শেষ, তখন বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন স্থানে মাঠা পরিবহনের জন্য ট্যাংকার ভ্যান। এমন পরিস্থিতিতে সুমন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ‘নিরাপদ মাংস এবং দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার উন্নয়ন প্রকল্প-আরএমটিপি’ এর কথা জানতে পেরে প্রকল্প অফিসে যোগাযোগ করেন।
বিভিন্ন স্থানে মাঠা পরিবহন করে বিক্রির জন্য ট্যাংকার ভ্যান ক্রয়ের সহায়তা বাবদ সংস্থার আরএমটিপি প্রকল্প সুমনকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করে। এর সাথে আরও ৭৫ হাজার টাকা যুক্ত করে ১ লাখ টাকা দিয়ে সুমন এবং তার বন্ধু ট্যাংকার ভ্যান কিনে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের ব্যস্ত এলাকায় মাঠা বিক্রি শুরু করেন।
সুমন কৃতজ্ঞতার সুরে বলেন, “যেখানে চাকুরি করে মাসে ১০-১১ হাজার টাকা আয় করতাম। সেখানে এখন মাসে আমরা ২ বন্ধু গড়ে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকা আয় করছি। একজনের মাসিক গড়ে ৩০ থেকে ৩২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে। আমাদের উদ্দেশ্য উদ্যোক্তা হিসেবে উদাহরণ সৃষ্টির মাধ্যমে অন্যদেরকে উৎসাহিত করা।”
সুমন আরও বলেন, “শুধুই টাকা নয় ওয়েভ ফাউন্ডেশনের লোগো আমাদের ব্যবসা সম্প্রসারণে পজিটিভ ইমেজ তৈরি করেছে। কারণ ওয়েভ ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গায় একটি বড় উন্নয়ন সহযোগী সংগঠন।” সুমন এবং তার বন্ধুর বিশ্বাস, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের আরএমটিপি প্রকল্প আমাদের মতো আরো নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে এগিয়ে আসবে।