মেহেরপুর সদরের মুখার্জী পাড়ার মেয়ে মোছা. তহমিনা খাতুনের পড়াশোনা হয়েছে এইচএসসি পর্যন্ত। তার বাবা ছিলেন কাপড় ব্যবসায়ী, সেখান থেকেই মূলত ব্যবসায় কাজে উদ্বুদ্ধ হওয়া। ২০০৮ সালে একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় তার চাকুরী হয়। কিন্তু পরিবারের বাধার কারণে চাকুরী করা হয়ে ওঠে না তহমিনার। এরপর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই বিয়ে হয়ে যায়। আর্থিকভাবে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রত্যাশায় একটি ম্যানুয়াল সেলাই মেশিন কিনে ঘরে বসেই অল্পবিস্তর কাজ শুরু করেন তিনি।

ঔষধ কোম্পানিতে স্বামীর কাজের সুবাদে তহমিনার পরিবার চলে আসে চুয়াডাঙ্গা শহরে। তহমিনা সেলাই কাজে খুব বেশি পারদর্শী ছিলেন না, তাই কাজটা আরো ভালভাবে শিখে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। এমন সময় স্থানীয় একটি পত্রিকার মাধ্যমে ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত SEIP প্রকল্পের ‘তিন মাসব্যাপী আবাসিক সুইং মেশিন অপারেশন’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পর্কে জানতে পারেন। পরবর্তীতে ২৩ মার্চ ২০২১ প্রশিক্ষণে যুক্ত হয়ে তিন মাস মেয়াদি কোর্সটি ভালভাবে সম্পন্ন করেন।

প্রশিক্ষণ শেষে নিজে বাড়িতে ১টি ম্যানুয়াল মেশিন আর ৫০০০ টাকা পুঁজি নিয়ে নারী-শিশুদের পোশাকের অর্ডারি কাজ ও ব্যবসা শুরু করেন। তার দক্ষ হাতের কাজের সুনাম এলাকায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আরও ৪টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল মেশিন কেনেন এবং বর্তমানে তহমিনার সাথে আরো ৫জন নারী কাজ করছেন। সানিয়া ড্রেস হাউজ নামে তার ১টি অনলাইন পেইজও রয়েছে। এছাড়া পেইজ WE এর সাথেও তহমিনা যুক্ত আছেন। WE তে যুক্ত হওয়ার পর ১ মাসে প্রায় ১ লাখ টাকার পণ্য বিক্রি হয় তার। সব মিলিয়ে এখন গড়ে এক থেকে দেড় লাখ টাকা মাসিক বেচা-কেনা হয়, যার মধ্যে নিট আয় প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

ভবিষ্যতে ছোট কারখানা তৈরির মাধ্যমে নিজেকে সফল উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া বেকার নারীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তহমিনা কাজ করতে চান। এক পুত্র ও কন্যা সন্তানের জননী তহমিনা আর্থিকভাবে তার স্বামীর পাশে দাড়াঁতে পেরে আজ ভীষণ খুশি।

Contact Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Not readable? Change text. captcha txt