ওয়ার্ল্ড সোশ্যাল ফোরামের অংশ হিসেবে দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাল ফোরাম আয়োজনের ধারাবাহিকতায় গত ১৮-২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় সোশ্যাল ফোরাম অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনকে কেন্দ্র করে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ নেটওয়ার্কের উদ্যোগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ‘কোভিড-১৯ এর আঘাতে সংকুচিত খাদ্য অধিকার’ শীর্ষক এক ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশসহ এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এই ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন।

ওয়েবিনারে স্বাগত জানিয়ে আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন ও খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ; নেপালের ন্যাশানাল ফার্মারস্ কমিশনের চেয়ারপারসন ড. প্রেম প্রসাদ দাঙ্গাল; একশন এইড, ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক এবং ওয়ার্ল্ড আরবান ক্যাম্পেইনের কো-চেয়ার সন্দীপ ছাছরা; থাইল্যান্ডের লোকাল ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের ড. ক্রিটসাডা বুনছাই; ভারতের রাইট টু ফুড ক্যাম্পেইনের শচীন জেইন এবং নেপালের রাইট টু ফুড নেটওয়ার্কের সুরেশ কুমার গৌতম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী কানিজ ফাতেমা।

স্বাগত বক্তব্য উপস্থাপনকালে মহসিন আলী বলেন, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জন-জীবন মারাত্মকভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, যা বিভিন্ন পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করলে প্রতীয়মান হয়। করোনার বিরূপ প্রভাবে খাদ্য, কর্মসংস্থানসহ সর্বস্তরে সংকট দেখা যাচ্ছে। আর্থ-সামাজিক এই সংকট নিরসনে সকলকে যার যার অবস্থান থেকে এগিয়ে আসতে হবে।’ ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘করোনাকালে আমরা দেখেছি খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থার দুর্বলতা। এখন আমাদের প্রয়োজন খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তা করার। এটা বলার সুযোগ নাই যে, আমাদের খাদ্য নেই। খাদ্যের যোগান রয়েছে, তবে বাজার ব্যবস্থায় সরবরাহে দুর্বলতা রয়েছে। আমাদের সমস্যা উত্তরণের পথ খুঁজতে হবে।’

নেপালের খাদ্য ব্যবস্থা নিয়ে বলতে গিয়ে ‘ফুড গভার্নেন্স’-এর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ড. প্রেম প্রসাদ দাঙ্গাল বলেন, ‘ফুড গভার্নেন্সের জন্য প্রয়োজন নীতি; সার্বভৌমত্ব; জবাবদিহিতা; সমন্বয়; জন-অংশগ্রহণ; প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়ন; পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন।’ ভারতের প্রতিনিধি সন্দীপ ছাছরা বলেন, ‘আমাদের ফিন্যানন্সিয়াল ক্যাপিটাললিজম প্রয়োজন। কোভিড সময়ে খাদ্য সংকট ও বেকারত্ব ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এখন আমাদের প্রয়োজন এক হওয়া। যৌথ শক্তিতে সমাধানের দিকে এগিয়ে যাওয়া।’

থাইল্যান্ড থেকে যুক্ত ড. ক্রিটসাডা বুনছাই বলেন, ~থাইল্যান্ড বৃহৎ খাদ্য রপ্তানিকারক দেশ হওয়া সত্তে¡ও করোনার সময়ে এ অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোর মতো এখানেও খাদ্য ব্যবস্থায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে।’ ভারতীয় প্রতিনিধি শচীন জেইন বলেন, ‘কোভিড কালীন খাদ্য, কৃষি, কর্মসংস্থান- সবক্ষেত্রে ভারত এক ভয়াবহ অবস্থা পার করছে। খাদ্য ব্যবস্থায় যথাপোযুক্ত উদ্যেগ নেওয়া প্রয়োজন এই ভয়াবহ পরিস্থিতি লাঘবে।’ নেপালী প্রতিনিধি সুরেশ কুমার গৌতম বলেন, ‘খাদ্য ব্যবস্থায় সহজপ্রাপ্যতা; অভিগম্যতা, ব্যয়নির্বাহ এবং সঠিকভাবে কাজে লাগানো- এই চারটি দিক লক্ষ রাখতে হবে।’

এসকল প্রতিনিধির পাশাপাশি বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংশ্লিষ্ট নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিগণ এ ওয়েবিনারে যুক্ত হয়ে তাদের মতামত দেন। উপস্থিত সকলের অংশগ্রহণে এবং নাগরিক সমাজের সম্মিলিত উদ্যোগে খাদ্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা ও বৈষম্য নিরসনে ‘দক্ষিণ এশিয়া সোশ্যাাল ফোরাম’ আয়োজনের আহবান জানানো হয়।

Contact Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Not readable? Change text. captcha txt