জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অধীনে ২০৩০ সালের মধ্যে সকল বয়সী মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাম্প্রতিক কোভিড-১৯ মহামারী আমাদের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থার নানাবিধ সংকট ও চ্যালেঞ্জগুলোকে সামনে নিয়ে এসেছে। এ প্রেক্ষাপটে কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ও প্রস্তুতির পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীসহ স্থানীয় জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং বিদ্যমান ব্যবস্থার দায়বদ্ধতা শক্তিশালীকরণের উদ্দেশ্যে ওয়েভ ফাউন্ডেশন একটি প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেছে।
দি এশিয়া ফাউন্ডেশন এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সহযোগিতায় শুরু হওয়া এ প্রকল্পের নাম ‘কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা ও জনচাহিদাভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ’। ১১ মাস মেয়াদি এ প্রকল্পের কর্মএলাকা চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা, আলমডাঙ্গা ও সদর উপজেলার ২৬টি ইউনিয়ন এবং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩০নং ওয়ার্ডের মেহেদিবাগ এলাকা। প্রকল্পের অংশগ্রহণকারী মূলত এসব এলাকার দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষ, যাদের মধ্যে রয়েছে আদিবাসী সম্প্রদায় এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রান্তিক নারী। প্রকল্পের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হলো: ১. সময়োপযোগী ও নির্ভরযোগ্য তথ্যে অভিগম্যতার মাধ্যমে ঢাকা ও চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোভিড-১৯ সংশ্লিষ্ট নিরাপদ স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা চর্চা এবং সহজলভ্য সহায়ক স্বাস্থ্যসেবা ও কর্মসূচি বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা; এবং ২. প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নিজেদের মতামত ও অংশগ্রহণের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে মহামারী ও অন্যান্য দুর্যোগ সহিষ্ণুতা শক্তিশালী করার জন্যে প্রকল্প এলাকার জাতীয় ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে নীতিমালা ও সহায়ক প্রক্রিয়ার উন্নয়ন ঘটানো। এ দুটি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের অধীনে রয়েছে মূলত পাঁচ ধরনের কার্যক্রম। সেগুলো যথাক্রমে: প্রকল্প পরিচিতি, মূল্যায়ন ও নাগরিক ফোরাম গঠন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি, প্রকল্প এলাকার স্বাস্থ্যসেবা প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ ও প্রতিবেদন প্রস্তুত, এডভোকেসি এবং ইস্যুভিত্তিক সংলাপ। ইতিমধ্যে প্রকল্প কর্মীদের প্রশিক্ষণ প্রদান, চুয়াডাঙ্গায় প্রকল্প পরিচিতি সভা ও লোকমোর্চার পুর্নগঠন কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল, সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় অভিগম্যতা ও প্রাপ্য দাবি আদায়ে নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে স্থানীয় পর্যায়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে এবং কমিউনিটি নেতাদের নিয়ে সভা পরিচালনার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসকল কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রকল্পটি-এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে এগিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।