আব্দুল আহাদ (৪৭) যশোর জেলার সদর উপজেলার তরফ নওয়াপাড়া গ্রামের একজন বাসিন্দা। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় মাত্র ১৪ বছর বয়সে কুটিরশিল্পের কাজে যুক্ত হন এবং প্রায় ৫ বছর অন্যের কারখানায় কাজ শেখেন। ভালোভাবে কাজ শেখার পর আহাদ কুটির শিল্পে একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু সেই যাত্রায় বাধা হয়ে দাঁড়ায় অর্থ। এরই মধ্যে আহাদ বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এবং অর্থাভাবে সংসারে নানা অশান্তি শুরু হয়। অন্যের দোকানে কাজ করে কোনমতে সংসার চালাতে থাকেন। এভাবেই মুখ থুবড়ে পড়ে তার উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবল ইচ্ছা ।
বেশ কয়েক বছর পর গত ২৭ অক্টোবর ২০২০ আহাদ তার স্ত্রী লিপি বেগমের মাধ্যমে ওয়েভ ফাউন্ডেশন ১২১-ঝুমঝুমপুর ইউনিটের মুক্তা মহিলা সমিতির সদস্য হয়ে ঋণের আবেদন করেন। ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ প্রথম দফায় ওয়েভ ফাউন্ডেশন থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ গ্রহণ করে নিজের কারখানার যাত্রা শুরু করেন। এরপর ১২ জানুয়ারি ২০২২ সংস্থা থেকে আরও ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ঋণ গ্রহণ করেন। এভাবে খুব অল্প সময়ে সাফল্যের সাথে এগিয়ে যান আহাদ। তার শিল্প প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স আহাদ এন্টারপ্রাইজ। হোটেল এবং বাসা-বাড়ির দৈনন্দিন ব্যবহারের লোহার তাওয়া, হাতা, ডুবো গরম তেলে ব্যবহারের ছাঁকনিসহ বহু ধরনের জিনিস তৈরি হয় তার কারখানায়। এসব দ্রব্য যশোর শহরে অবস্থিত লোহাপট্টির বিভিন্ন মহাজনের কাছে সরবরাহ করেন আহাদ। বর্তমানে তার মাসিক আয় ২৫-৩০ হাজার টাকা।
তার সফল উদ্যোগে পাড়া-প্রতিবেশি অনেকের বেকারত্ব ঘুচেছে। এখানেই আহাদ থেমে থাকেননি, কারখানার লাভের টাকা দিয়ে নিজ বাড়িতে প্রতিষ্ঠা করেছেন একটি মুদি দোকান। যা তার পরিবারে বিকল্প আয়ের পথ তৈরি করেছে। আহাদের সংসারে ফিরে এসেছে সুখ-সমৃদ্ধি, ভালোভাবে মানুষ করছেন ছেলেমেয়েদের। সম্প্রতি বাড়িসহ ৫ কাঠা জমিও কিনেছেন।
আহাদ অশ্রুসিক্ত কন্ঠে বলেন, “বউ-বাচ্চা নিয়ে এখন অনেক সুখে আছি, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ। আগামী দিনেও সংস্থার সহযোগিতা পাইলে নিশ্চিতভাবে কারখানাটি আরও বড় করতে পারবো।”