পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের চরহরিদেবপুর গ্রামে বসবাস করেন মরিয়ম বেগম (৪০)। ২ মেয়ে, ১ ছেলে ও শাশুড়িকে নিয়ে মোট ৬ জনের সংসারে উপার্জনশীল একমাত্র ব্যক্তি স্বামী হারুন বাবুর্চি। স্বামীর উপার্জনে কোনমতে তাদের সংসার চলে। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারে স্বচ্ছলতার লক্ষ্যে অনেক আগে থেকেই মরিয়ম বেগম বাড়িতে ছাগল পালন করতে চাইতেন। কিন্তু ছাগল ক্রয় ও ছাগল মারা যাওয়ার কথা চিন্তা করে এ উদ্যোগ গ্রহণের সাহস পাননি।
২০২০ সালে ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রসপারিটি প্রকল্পের জরিপ কার্যক্রমের মাধ্যমে অতিদরিদ্র খানা হিসেবে তার পরিবার নির্বাচিত হয় এবং পরবর্তীতে তিনি Ôপ্রসপারিটি মেঘনা গ্রাম কমিটি’তে যুক্ত হন। কমিটির সাপ্তাহিক মিটিং এ ছাগল পালনের দক্ষতা উন্নয়ন বিষয়ক প্রশিক্ষণের জন্য মরিয়মের নাম নির্বাচিত হয়। তিনি ২ দিনের প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন এবং প্রশিক্ষণ শেষে তাকে ২টি মা ছাগল দেয়া হয়। এছাড়া ছাগলের ঘর তৈরি বাবদ ১০ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়।
মরিয়ম মাঁচা পদ্ধতিতে ছাগল পালন শুরু করেন। ওয়েভ ফাউন্ডেশন হতে দেয়া ২টির সাথে তিনি আরো একটি মা ছাগল ক্রয় করেন। প্রসপারিটি প্রকল্প থেকে ছাগলের কৃমিনাশক ও পিপিআর-এর ভ্যাকসিন থেকে শুরু করে সকল প্রকার কারিগরি সহায়তা প্রদান করা হয়। ইতিমধ্যে তার ২টি মা ছাগল ৫টি বাচ্চা দিয়েছে। বর্তমানে মরিয়মের বাড়িতে মোট ছাগল সংখ্যা ৮টি। আগামী এক বছরে তার খামারে ২০টি ছাগল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মী-কর্মকর্তাগণ তাকে সার্বিক পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন।
ভবিষ্যতে একজন সফল খামারী হতে চান মরিয়ম। তিনি বলেন, “আজ ওয়েভ ফাউন্ডেশন আমার পাশে ছিল বলেই আমি ছাগল পালনের সাহস দেখাতে পারছি। আমার বিশ্বাস এভাবে চলতে খাকলে, সংসারে আয়-উন্নতি আসবে এবং সন্তানেরা আবার পড়ালেখা শুরু করতে পারবে।”