২০২০ সালে মোছা. মীম আক্তারের পরিবার প্রসপারিটি প্রকল্পের অধীন পরিচালিত সেনসাস বা জনগণনার মাধ্যমে অতিদরিদ্র খানার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়। পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে মীম প্রসপারিটি গ্রাম কমিটিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান। কমিটির সাপ্তাহিক সভায় সদস্যরা আলোচনা করে তাকে সেলাই প্রশিক্ষণের জন্য নির্বাচন করেন। পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা ইউনিয়নের দক্ষিণ কালিকাপুর গ্রামে বাস করে মীমের পরিবার।
নিজেদের কোনো জায়গা-জমি না থাকায় সরকারের খাস জমিতে এই এলাকারই গুচ্ছ গ্রাম আবাসন প্রকল্পের একটি ঘরে ২০১৮ সালে তার পরিবার স্থানান্তরিত হয়। মীমের বয়স যখন মাত্র ৭ বছর তখন তার পিতার মৃত্যু হয়। একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পড়ে পরিবারটি। বড় বোন শারীরিক প্রতিবন্ধী। অন্যের বাডিতে এবং মাঝে মধ্যে কৃষি ক্ষেতে কাজ করে সংসার চালানো শুরু করেন মীমের মা। এখন মীমের বয়স ১৮। গত ফেব্রুয়ারি ২০২১ প্রসপারিটি প্রকল্পের অধীনে আয়োজিত ৩০ দিনব্যাপী সেলাই প্রশিক্ষণে মীম অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ থেকে প্রাপ্ত অনুদান দিয়ে একটি সেলাই মেশিন এবং কিছু কাপড় ক্রয় করে নিজ বাড়িতে লেখাপড়ার পাশাপাশি সেলাই এর কাজ শুরু করেন।
মীম স্থানীয় বাজারের থেকে মজুরি কম রাখেন এবং ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী যথাসময়ে অর্ডার ডেলেভারি করেন। মজুরি কম এবং দরিদ্র এলাকা হওয়ায়, মীম অনেক অর্ডার পেতে শুরু করেন। এভাবেই অল্প কিছুদিনের মধ্যে তিনি এলাকায় বেশ পরিচিতি লাভ করেন। বর্তমানে প্রতিমাসে গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা আয় করছেন মীম। যার মাধ্যমে সে তার পরিবারকেও সহায়তা করতে পারছে। মীম স্বপ্ন দেখেন, “একদিন তার টেইলরিং এর একটি বড় দোকান হবে এবং সেলাই প্রশিক্ষক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করবেন।”