বদলে যাচ্ছে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার শিঙ্গিয়া গ্রাম। বদলে গেছে শিঙ্গিয়া গ্রামের পূর্ব মাঠ। কয়েক বছর আগেও যেখানে ছিল বিরান পতিত জমি। এখন সেখানে সবুজ আর জীবনের আহ্বান। মূলত শিঙ্গিয়া কৃষি মোর্চার উদ্যোগে পাল্টে গেছে দৃশ্যপট। ২০১৯ সালের শুরুর দিকে ওয়েভ ফাউন্ডেশন শিঙ্গিয়া গ্রামের কৃষকদের সংগঠিত করে গড়ে তোলে এ কৃষি মোর্চা।
শিঙ্গিয়া কৃষি মোর্চার নিজস্ব অফিসকে কেন্দ্র করে সপ্তাহে একদিন সবজি বাজার বসে। পাইকাররা নিয়মিত সেখানে আসেন সবজি ক্রয় করতে। স্থানীয় কৃষক সুশান্ত বিশ্বাস বলেন, “আগে সবজি বিক্রয় করতে অন্যত্র যেতে হতো, এখন গ্রামে বসে সবজি বিক্রির সুযোগ পাচ্ছি। ফলে মালামাল পরিবহন, হিজলা এবং সুইপার খরচসহ সময় সাশ্রয় হচ্ছে।” কৃষি মোর্চার উদ্যোগে এলাকার কৃষকদের মধ্যে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও কৃষি যন্ত্রাংশের ব্যবহারে আগ্রহ বেড়েছে। সবজি চাষে কীটনাশকের ব্যবহার দিন দিন কমছে। আশা করা যায় আগামী দু বা এক বছরের মধ্যে এলাকায় কীটনাশকের ব্যবহার অনেক হ্রাস পাবে।
সবজি বিক্রেতা মো. আব্দুল হান্নানের মতে, “দূরের বাজারে সবজির যে দাম এখানেও একই দাম। তাই আমরা দূরে না গিয়ে সকালে সবজি বিক্রি করে বাকি সময় আবার মাঠে চাষাবাদে সময় দিতে পারি।” সবজি পাইকার ঝনু মিয়া এবং নারায়ণ ব্যাপারী বলেন, “গ্রাম থেকে সবজি ক্রয় করলে আমাদের সুবিধা হয়। বাজারে গিয়ে ক্রয় করলে কাটা খরচ, বাজার ইজারাদার, সুইপার খরচসহ মূল্য অনেক বেড়ে যায়।”
কৃষি মোর্চার সাধারণ সম্পাদক শিমুল হোসেন জানান, “সৌর পাম্প স্থাপনের মাধ্যমেই আজকের এই দৃশ্যপট। কৃষি মোর্চা গঠনের পর শিঙ্গিয়া গ্রামের পতিত জমি বাজারে পরিণত হয়েছে। একই সাথে গ্রামে নতুন নতুন ব্যবসায়ীদের আগমন এবং কৃষি বাজারকে কেন্দ্র করে বেশ কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।”
কৃষি মোর্চা অফিস এখন এলাকার চাষীদের অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং মিলন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। আগামীতে অফিস কেন্দ্রিক একটি লাইব্রেরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে। ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর এমন উদ্যোগে এলাকাবাসী ভীষণ খুশি। শিঙ্গিয়া গ্রামের বদলে যাওয়ার গল্প দেখে প্বার্শবর্তী অনেক গ্রাম আজ অনুপ্রাণিত।