“পরিশ্রম আর বুদ্ধি দিয়ে আমি আমার দুঃখের দিন পার করছি। এখন অনেক সুখে আছি। তাই এলাকার মানুষ আমার কথা বলে।” বক্তব্যগুলো চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার উজিরপুর গ্রামের সফল উদ্যোক্তা মোছা. শাহানারা খাতুনের। স্বামীর আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় অভাব ছিল তাদের নিত্য সঙ্গী। দারিদ্র্যকে জয় করে কীভাবে আলোর মুখ দেখবেন এ চিন্তা শাহানারাকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে নিয়ে বেড়াতো।

অভাব-অনটনে জর্জরিত শাহানারা একদিন তার স্বামীকে চাষাবাদের পাশাপাশি বিকল্প কিছু করার জন্য বলেন। এমতাবস্থায় প্রতিবেশী আম্বিয়ার পরামর্শে ছাগল পালনে আগ্রহী হয়ে ২০১৫ সালে তারা ৩টি ছাগল ক্রয় করেন। ৫ মাসের মধ্যে ছাগল তিনটি থেকে ৬টি বাচ্চা হয়। বাচ্চাগুলোর বয়স ৮ মাস হলে এর মধ্যে ৪টি খাসির বাচ্চা ৪৬ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।

ছাগল পালন লাভজনক হওয়ায় শাহানারা বড় খামার করার স্বপ্ন নিয়ে তার স্বামীর সাথে আলোচনা করেন। কিন্তু এত পুঁজি কোথা থেকে আসবে, এই দুঃচিন্তায় শাহানারার চোখে ঘুম আসে না। অবশেষে খোঁজখবর নিয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের কোষাঘাটা ইউনিট-৫৭ (জেলা: চুয়াডাঙ্গা, উপজেলা: দামুড়হুদা) এর সাথে যোগাযোগ করে লিফট প্রকল্পের মাধ্যমে ২০১৬ সালে ১৫ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করেন। তারপর ধীরে ধীরে খামারের কাজে হাত দেন। বর্তমানে শাহানারা সংস্থা থেকে ৪৪ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে খামারে বিনিয়োগ করেছেন। এছাড়াও ছাগল পালন বিষয়ে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।

বর্তমানে তার খামারে মোট ২৬টি ছাগল রয়েছে যার সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতি বছর শাহানারা ২০ থেকে ২৫টি ছাগল বিক্রয় করেন, যা টাকার হিসাবে প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা। যা থেকে প্রতি বছর প্রায় ১.৮ লক্ষ টাকা মুনাফা অর্জন করছেন। ইতিমধ্যে তিন সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন।

ছাগল পালন করে আত্মনির্ভরশীলতার এক উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শাহানারা। এলাকার মানুষের কাছে তিনি একজন অনুকরণীয় উদ্যোক্তা। শাহানারা বিশ্বাস করেন, পরিশ্রম এবং সদিচ্ছা থাকলে সবার পক্ষেই একদিন ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব। আর পাশে যদি ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর মত সহযোগী প্রতিষ্ঠান থাকে তাহলে সেই বন্ধুর পথ আরও মসৃণ হয়।

Contact Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Not readable? Change text. captcha txt