স্থানীয় কৃষকদের উৎপাদিত সবজি, উচ্চমূল্যের ফসল, ফলমূল ন্যায্যমূল্যে বিক্রি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ক্রেতা, নতুন ক্রেতা ও ঢাকাসহ বিভিন্ন আঞ্চলিক বাজারের সাথে সংযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার ধান্যঘরা গ্রামে সংস্থার উদ্যোগে ”কমিউনিটি ভিত্তিক কৃষি পণ্য সংগ্রহ ও বিপণন কেন্দ্র” গড়ে তোলা হয়েছে। বর্তমানে এই কেন্দ্রটি ইনপুট-আউটপুট বাজার পরিষেবা, পরিবহন সুবিধা এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ প্রদানে কৃষকদের জন্য একটি ওয়ান-স্টপ সার্ভিস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করছে। প্রথমদিকে ১০০ কৃষকের শাকসবজি বিক্রি এবং বিভিন্ন কৃষিভিত্তিক পরিষেবা সহজীকরণের জন্য কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও বর্তমানে প্রায় ৩০০ ছোট-বড় কৃষক এই কেন্দ্র হতে সেবা পাচ্ছেন।
যেসব ছোট কৃষক তাদের উৎপাদিত স্বল্প পরিমাণ কৃষি পণ্য বাজারজাত করতে পারতেন না বা প্রতিবেশীই ছিল প্রধান ক্রেতা, তারাও এখন অতি সহজে এই কেন্দ্রের মাধ্যমে ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি করতে পারছেন। এছাড়াও এই কেন্দ্রের মাধ্যমে কৃষকদের কাছে সুলভমূল্যে ফসল উৎপাদন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মানসম্পন্ন উপকরণ (বীজ, জৈব সার, জৈব বালাইনাশক) বিক্রি করা হচ্ছে, ফসল চাষ সম্পর্কিত কারিগরী সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে এবং তাদের উৎপাদিত ও সংগৃহীত পণ্যের সর্টিং, গ্রেডিং ও প্যাকেজিং করে খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে সংযোগ স্থাপন করে বিক্রির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিদিন ৮০০-১০০০ কেজি বিভিন্ন ধরনের সবজি সংগ্রহ করে এসব বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
কেন্দ্রের আর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট হচ্ছে, এর সাথে জড়িত প্রতিনিধিরা প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থানের আড়তদারদের সাথে যোগাযোগ করে প্রতিটি সবজির মূল্য নির্ধারণ করে কৃষকদের কাছ থেকে সবজি সংগ্রহ করে থাকেন। যার ফলে কৃষকরা পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন না। প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০ হাজার টাকার সবজি কেন্দ্রটিতে সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া বাজারে এ কেন্দ্রের অবস্থান না হওয়ার কারণে কৃষকদের আড়ৎ-এর খাজনা ও শ্রমিক খরচ লাগে না। ফলে কেজি প্রতি আরও ২-৩ টাকা বেশি মূল্য পান কৃষকরা। সংগৃহীত পণ্য প্যাকেজিং করার ফলে পরিবহনজনিত ক্ষতিও কম হয়। সার্বিকভাবে সংস্থার এ ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এলাকার কৃষকদের আয় বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি খাতেও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে।