গরু-ছাগল-কবুতর বিক্রির টাকার সাথে আরও কিছু যোগ করে ১ বিঘা বন্ধকী জমির ৩০ মণ ধানে বছরের ভাতের অভাব মিটে যায়। আর গরু, ছাগল ও কবুতর পালনসহ সারা বছর অন্যের জমির মরিচ তুলে, ধান কুঁড়িয়ে ও ধান ঝেড়ে সংসারের বাকি খরচ মিটিয়ে কিছু সঞ্চয় করি, সব মিলিয়ে ভিক্ষে ছেড়ে বেশ ভাল আছি।” কথাচ্ছলে বললেন, জীবননগর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কালা গ্রামের কফিরন বেগম (৬৫)।

আজ থেকে প্রায় ৫০ বছর আগে একই গ্রামের দিনমজুর খেদের আলীর সাথে বিয়ের পর খেয়ে-না খেয়ে দিন চলছিল কফিরন-খেদের দম্পতির। ১০ বছর আগে খেদের আলী ঠিকমতো চোখে দেখতে না পাওয়ার কারণে দিনমজুরির কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। কোনো উপায় না দেখে বেছে নেন ভিক্ষাবৃত্তি। এভাবে চলে প্রায় ৩-৪ বছর। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের শেষের দিকে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের সমৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় সংশ্লিষ্ট ইউপি ওয়ার্ড কমিটির মাধ্যমে ভিক্ষুক পুনর্বাসনে নির্বাচিত হন কফিরন-খেদে দম্পতি। কফিরনকে ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে উদ্যোমী সদস্য হবার শর্তে প্রকল্প অনুদানের ১ লক্ষ টাকা থেকে বাছুরসহ একটি গাভী গরু, দুইটি ছাগল ও ৫ জোড়া কবুতর, গোয়ালঘর, ছাগলের মাচাসহ টিউবওয়েল এবং বসতঘর সংস্কার করে দেয়া হয়। এরপর থেকে শুরু হয় তাদের নতুন পথচলা।

গাভী থেকে ২টি এঁড়ে বাছুর হয়, ছাগল ও কবুতর বাড়তে থাকে। ১টি বাছুর বিক্রির ১ লক্ষ ২৭ হাজার, ৩টি ছাগল বিক্রির ২৩ হাজার ও ৩ হাজার টাকার কবুতর বিক্রি করে মোট ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বাড়ির সাথে ২ কাঠা  ৫ গোন্ডা জমি কিনেছেন। মাঠে ১ বিঘা জমি লিজ নিয়ে ২ বার ধান ও ভুট্টা চাষ করেন। বর্তমানে মোট সম্পদ প্রায় ৬ লক্ষ (গরু ২টি, ছাগল ৩টি, কবুতর ৬ জোড়া, ভিটা জমি ও টাকা ফেরত ১ বিঘা বন্ধকী জমি) টাকার মতো। সব মিলিয়ে ভিক্ষা ছেড়ে বেশ সুখে আছেন উদ্যোমী সদস্য নিঃসন্তান কফিরন-দম্পতি। মর্যাদাপূর্ণ জীবনের স্বপ্নে নিরন্তর সংগ্রাম করছেন আত্মপ্রত্যয়ী কফিরন।

Contact Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Not readable? Change text. captcha txt