মাছুরার দিন বদলের গল্প
ছোটবেলা থেকেই মাছুরার স্বপ্ন ছিল একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার। নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মোছাঃ মাছুরা নাটোর জেলার নলডাঙ্গা উপজেলার হলুদযর গ্রামের মেয়ে। অর্থের অভাবে ৫ম শ্রেণীর পর আর লেখাপড়া হয়নি তার। ২০১৭ সালে নিজের সদিচ্ছা আর চেষ্টার ফলে তিনি বসতবাড়িতে ছোট পরিসরে কুটির শিল্পের কাজ শুরু করেন। শুরু থেকে ব্যবসা ভালোই চলছিল কিন্ত পুঁজির অভাবে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য সরবরাহ করতে পারছিলেন না। ব্যবসায় অর্থের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও আত্মবিশ্বাসের অভাবে ঋণ নিতে ভয় পাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় ওয়েভ ফাউন্ডেশনের মাঠকর্মীর সাথে তার পরিচয় হয় এবং ২৮ অক্টোবর, ২০১৭ ‘প্রগতি ’মহিলা সমিতিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। ১ম দফায় ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রমের আওতায় ৩০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে সম্পূর্ণ অর্থই তিনি ব্যবসার কাজে লাগান। কাজের অগ্রগতির প্রেক্ষিতে তিনি সংস্থা থেকে ২য় দফায় ৪০ হাজার এবং ৩য় দফায় ১ লক্ষ টাকা ঋণ পান। এভাবে ওয়েভের সহায়তায় ধীরে ধীরে তার ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধি পেতে থাকে।বিগত ৩ বছরে ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশাপাশি মাছুরার জীবন মানে যথেষ্ট পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে তার মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১ বিঘা এবং বসত ভিটা ৫ কাঠা। বিগত বছরে তার নীট সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৪ লক্ষ টাকা। তিনি এখন সমাজের একজন সফল ব্যবসায়ী এবং পরিচিত মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন। বর্তমানে তার অধীনে ৪ জন খন্ডকালীন এবং ৫ জন সার্বক্ষণিক কারিগর কাজ করছেন। অবস্থার পরিবর্তনের কথা বলতে গিয়ে মাছুরা বলেন, আমি নিজেও কাজ করি এবং আমার স্বামী পণ্য সরবরাহ কাজে সহযোগিতা করে। পাশাপাশি দরিদ্র ও অবহেলিত কিছু মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছি। আমি বিভিন্ন সামাজিক কাজেও আর্থিক সহায়তা করে থাকি। আমার সফলতার পেছনে ওয়েভ ফাউন্ডেশন যে অবদান রেখেছে তা সর্বদা স্বীকার করি। জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে মাছুরার সামাজিক মর্যাদা এখন বেড়েছে। তার স্বপ্ন ব্যবসা আরও বড় করার। একটু সহযোগিতা পেলে পরিশ্রমের মাধ্যমে, তিনি অবশ্যই তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন।