ড্রাগন ফল চাষে ফিরল নজরুলের ভাগ্য
অভাব-অনটনের সংসারে যে নজরুল ইসলাম এক সময় অন্ধকার দেখতো, সমাজের কাছে যার গ্রহণযোগ্যতা ছিল না, সে এখন সমাজের সবকাজে অংশগ্রহণ করে। ড্রাগন চাষ করে আত্মনির্ভরশীলতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে নজরুল-বিউটি দম্পতি এখন এলাকার মানুষেরকাছে অনুকরণীয় হয়ে উঠেছেন। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বিদ্যাধরপুর ইউনিয়নে তার জন্ম ১৯৮৫ সালে।
২৮ বছর বয়সে একই গ্রামের মেয়ে মোছাঃ বিউটি খাতুনের সাথে নজরুল ইসলামের বিয়ে হয়। দরিদ্র বাবার সংসারে এসএসসির পর আরলেখাপড়া হয়নি তার। জীবনের আলো দেখতে ব্যর্থ নজরুল হতাশায় নিমজ্জিত না হয়ে চিন্তা করেন বিকল্প কিছু করার। পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ১০কাঠা জমি নিয়ে তিনি ড্রাগন ফল চাষ শুরু করেন। কিন্তু চাষের অভিজ্ঞতা না থাকায় সেখানেও ভাল ফল পান নি। এমন সময় ড্রাগন চাষ নিয়েওয়েভ ফাউন্ডেশনের ঋণ কর্মসূচির মাঠকর্মী ও কর্মকর্তাদের সাথে তার যোগাযোগ হয়। ব্যতিক্রমী ফল চাষের কথা শুনে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাসরেজমিনে ড্রাগন ফলের বাগানটি পরিদর্শন করেন। গত ১০ অক্টোবর ২০১৯ নজরুলের স্ত্রী মোছাঃ বিউটি খাতুনকে ওয়েভ পরিচালিত‘‘বৃষ্টি–২’’ মহিলা সমিতিতে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। বিউটি খাতুনকে ১ম দফায় ৫০০০০ টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় ১০০০০০ টাকা ঋণপ্রদান করা হয়। ঋণের কিছু টাকার সাথে নিজের জমানো টাকা যোগ করে নজরুল আরো ৬.৫ বিঘা জমি নিয়ে মোট ৭ বিঘা জমিতে ড্রাগন ফলেরচাষ শুরু করেন। একবিঘা জমিতে দুই বছর মেয়াদে ড্রাগন ফলের চাষ করতে খরচ হয় ২ থেকে ২.৩ লক্ষ টাকা এবং আয় ৪.৫ লক্ষ টাকা। ৭বিঘার মধ্যে বর্তমানে ৩.৫ বিঘায় ড্রাগন ফলের চাষ হচ্ছে। যা থেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় হয়। নজরুল নিজেসহ তার বাবা এবংআরো ৬ জন কর্মচারী প্রতিদিন এই বাগানে কাজ করেন। এছাড়াও বাকি জমিতে তার পেয়ারা বাগান রয়েছে। সেখান থেকেও প্রতি মাসে খরচ বাদে২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা আয় হয়।
গ্রামের কর্মচঞ্চল উদ্যোমী নজরুল তার অক্লান্ত পরিশ্রম ও বুদ্ধিমত্তা দিয়ে অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে শুরু করেছেন। তার স্বপ্ন ড্রাগন চাষ আরো বিস্তৃতহবে যার মাধ্যমে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।