বাংলাদেশের পুষ্টি উন্নয়ন ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ প্রতিশ্রুতি নির্ধারণে যুবদের মতামত জানতে ১৮ জানুয়ারি ২০২৫ ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর প্রধান কার্যালয়ে ‘ইয়ুথ কনসালটেশন অন নিউট্রিশন ফর গ্রোথ (N4G) কমিটমেন্ট ডেভেলপমেন্ট’ শীর্ষক একটি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। ‘সান ইয়ুথ নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ’ এবং ‘গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ইমপ্রুভড নিউট্রিশন’ (GAIN) এর সহযোগিতায় ইয়ুথ এসেম্বলির উদ্যোগে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩০জন তরুণ অংশ নেন।
জলবায়ু ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা এবং পুষ্টি ও সংকটকালীন সহনশীলতা-এই দুটি মূল বিষয়কে কেন্দ্র করে শুরুতেই একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুবদের মতামতের ভিত্তিতে এ আলোচনায় যেসব উল্লেখযোগ্য সুপারিশ উঠে এসেছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- যুব নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ বৃদ্ধি, উন্নত কৃষি প্রযুক্তির গ্রহণ, সহায়ক নীতি বাস্তবায়ন এবং সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা শক্তিশালী করা।
অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা’র সান সেক্রেটারিয়াটের প্রোগ্রাম অফিসার কাজী মো. ওবায়দুল হক। তিনি যুবদের সক্রিয় ভূমিকা ও নীতিনির্ধারণে তাদের সম্পৃক্ততার গুরুত্ব তুলে ধরেন। সান ইয়ুথ নেটওয়ার্কের সুমাইয়া আক্তার ও আশাব আল ইয়ামিন আলোচনা সভা শেষে একটি কর্মশালা পরিচালনা করেন। এতে ২০২৫ সালে প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য N4G সম্মেলনে বাংলাদেশের অবদানের জন্য সহায়ক বিষয়সমূহ কী হতে পারে সে বিষয়ে তরুণদের মতামত জানতে চাওয়া হয়। অংশগ্রহণকারী যুবরা চারটি দলে বিভক্ত হয়ে নির্দিষ্ট বিষয়ে মতামত ও সুপারিশ প্রদান করেন। ‘খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা’ প্রসঙ্গে তারা দারিদ্র্য ও খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সঠিক পরিকল্পনা ও নীতিগত পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। ‘খাদ্য ব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তন’ বিষয়ে তারা জলবায়ু সহনশীল কৃষি প্রযুক্তি ও টেকসই খাদ্য উৎপাদন কৌশল নিয়ে মতামত দেন। ‘স্মার্ট কৃষি’ নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে তারা উন্নত কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের কৃষিতে যুক্ত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এছাড়া, ‘জরুরি খাদ্য ব্যবস্থা’ নিয়ে তারা দুর্যোগকালে দ্রুত খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পরিকল্পনার একটি ধারণা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে N4G বিশ্বজুড়ে অংশীদারিত্ব ও তহবিল সংগ্রহের মাধ্যমে অপুষ্টি মোকাবিলায় কাজ করছে। বাংলাদেশ ধারাবাহিকভাবে N4G সম্মেলনে অবদান রেখে আসছে, যেখানে স্বাস্থ্য, খাদ্য ব্যবস্থা এবং স্থিতিশীলতা মূল থিম হিসেবে গুরুত্ব পেয়েছে। আগামী ২৭-২৮ মার্চ ২০২৫, ফ্রান্সের প্যারিসে অনুষ্ঠিতব্য N4G সামিটে প্রাপ্ত পরামর্শসমূহ নিয়ে একটি শক্তিশালী এবং কার্যকরী প্রতিশ্রুতি উপস্থাপন করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়, যার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে জলবায়ু ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা এবং পুষ্টি ও সংকটকালীন সহনশীলতাসহ ছয়টি বিষয়ভিত্তিক ক্ষেত্র।