চুয়াডাঙ্গার শিল্প নগরী দর্শনায় সোনিয়ার জীবন কখনোই সহজ ছিল না। মাত্র এক বছর বয়সে মা হারানোর পর থেকেই তার জীবনে শুরু হয় কঠিন পথচলা। বাবা আবার বিয়ে করলে সোনিয়া সৎমায়ের সংসারে বড় হন। কষ্টের মধ্যেও তিনি হাল ছাড়েননি। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করে তিনি জীবনের অনেক বাধা পার করেন।
জীবন তখনও কঠিন ছিল। অল্প বয়সে বিয়ে হয়, আর স্বামীর মাসে ৫,০০০ টাকা আয়ে সংসার চালানো ছিল মুশকিল। তবু সোনিয়া স্বপ্ন দেখতেন—স্বামীর পাশে দাঁড়িয়ে পরিবারকে সাহায্য করার স্বপ্ন।
একদিন তার জীবনে নতুন মোড় আসে। ওয়েভ ফাউন্ডেশনের অঙ্কুর ক্র্যাফটসের ফিল্ড ট্রেনার নাহিদা পারভিনের সঙ্গে পরিচয় হয়। নাহিদা তাকে জানান, বেকার নারীদের জন্য হস্তশিল্পের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সঙ্গে মিলছে ছোট পারিশ্রমিক। সোনিয়া সুযোগটি কাজে লাগান। প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি দ্রুত দক্ষতা অর্জন করেন।
প্রশিক্ষণ শেষে তিনি বাড়িতে বসে হস্তশিল্পের অর্ডার নিতে শুরু করেন। শুরুতে সোনিয়া নিজের আয় বাড়ানোর জন্য খুব পরিশ্রম করেন। প্রতিদিনের কাজ এবং অর্ডারের পরিমাণ বাড়তে থাকে। কঠোর পরিশ্রমে তার আয় বাড়তে থাকে। স্বামীর সঙ্গে মিলে তাদের সংসারের আয় বৃদ্ধি পায়। একটি ছোট পদক্ষেপ তার জীবনে বড় পরিবর্তন আনে—সোনিয়া স্বাবলম্বী হন।
বর্তমানে সোনিয়া মাসে ১০,০০০-১২,০০০ টাকা আয় করেন। স্বামীর আয় মিলে তাদের মোট আয় ২৫,০০০ টাকা। এই টাকায় সংসার চলে, সন্তানের লেখাপড়াও হয়, কিছু টাকা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করেন। কষ্টের দিনগুলো পিছনে ফেলে সোনিয়া এখন নিজের পরিশ্রমে একটি স্থিতিশীল জীবন গড়েছেন।