পিকেএসএফ ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে কৈশোর কর্মসূচির মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের ক্লাব গঠন ও নানাবিধ সৃজনশীল কার্যক্রমে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে তাদেরকে মানবিক, দক্ষ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার এক মাসিক সমন্বয় সভায় তরুণদের নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক মতবিনিময়ের প্রয়োজনীয়তা এবং সামাজিক অবক্ষয় রোধ ও কিশোর-কিশোরীদের শিক্ষানুরাগী হিসেবে গড়ে তুলতে তথ্যবহুল পথ নাটক ও লোকসঙ্গীতের মাধ্যমে প্রচারণার গুরুত্বেও বিষয়টি আলোচনায় উঠে আসে। সে ধারাবাহিকতায় দামুড়হুদা উপজেলার তিনটি ক্লাব বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি, শিশুশ্রম, আত্মহত্যা প্রবণতা ইত্যাদি রোধে করণীয় বিষয়ে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভূমিকা সম্বলিত নাটক রচনা ও কর্মশালার মাধ্যমে নাটকের দল গঠন করে ক্ষুদ্র পরিসরে পরিবেশনা শুরু করে।
ইতিমধ্যে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা জেলাস্থ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সাংস্কৃতিক সংগঠন, গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের এক অনুষ্ঠানে বলেন, “আমার জানা মতে, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও কুষ্টিয়া জেলা আত্মহত্যাপ্রবণ এলাকা। আমি চুয়াডাঙ্গা জেলার ৪টি উপজেলায় আত্মহত্যা প্রবণতা রোধে ব্যাপক জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে চাই। সে ক্ষেত্রে কোনো সংস্থার অভিজ্ঞতা, আগ্রহ ও সক্ষমতা আছে জানলে পদক্ষেপ নিতে সুবিধা হবে।” সেখানে উপস্থিত অধিকাংশই ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ‘লোক থিয়েটার’ এর কথা বললে প্রাথমিকভাবে দায়িত্বটা সংস্থাকেই দেওয়া হয়। এরপর বিগত ১৬ মে ২০২৪ জেলা প্রশাসক ওয়েভ ফাউন্ডেশনের জীবননগর অফিসে সংস্থার কার্যক্রম পরিদর্শনে গিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ‘আত্মহত্যা প্রবণতার কারণ ও রোধে করণীয়’ বিষয়ে ‘লোক থিয়েটার’ কর্তৃক একটি নাটক লেখা, রিহার্সেল ও ডামি উপস্থাপনের ব্যবস্থা করতে বলেন, যা পরবর্তীতে জেলার সকল উপজেলায় মঞ্চস্থ করা হবে।
এরপর ‘লোক থিয়েটার’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ইসরাইল খান টিটোর নির্দেশনায় পারকৃষ্ণপুর-মদনা ইউনিয়ন এবং দর্শনা পৌরসভার কিশোর-কিশোরী ক্লাবের ১৩ জন সদস্যের নাট্যদল গঠন ও কর্মশালা শেষে গত ১৩ জুলাই ২০২৪ কোষাঘাটার গো-গ্রীন সেন্টারে ‘এসো জীবন বাঁচাই’ নাটকটির পরীক্ষামূলক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এতে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক, দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সভাপতি ও সাংবাদিকসহ সংস্থার কর্মী-কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রদর্শনী শেষে জেলা প্রশাসক উপস্থিত অতিথিবৃন্দের কাছে নাটকটির উৎকর্ষতা সাধনে মতামত জানতে চাইলে সকলেই নাটকের স্ক্রিপ্টসহ কলাকুশলীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এরপর জেলা প্রশাসক সকল উপজেলায় নাটকটির প্রদর্শনী নিশ্চিত করতে উপজেলা কর্মকর্তাগণকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন। আশা করা হচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে নাটকটির প্রদর্শন কার্যক্রম জেলায় আত্মহত্যা প্রবণতাসহ অন্যান্য সামাজিক অবক্ষয় রোধে বিশেষ অবদান রাখবে।