যশোরের চৌগাছা উপজেলার নিয়ামতপুর গ্রামে অভাব-অনটনের সংসারে শুরু হয়েছিল আঙ্গুর বেগম ও শরিফুল ইসলামের জীবন। জমিজমা ছিল না, ছিল না আয়-রোজগারের ভরসা। সংসারের খরচ ও সন্তানের দুধের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছিলেন তারা। এই দুঃসময়ে তারা নতুন আশার আলো দেখলেন ড্রাগন ফল চাষে। কিন্তু মূল বাধা হয়ে দাঁড়াল টাকার অভাব। আত্মীয়-স্বজনের কাছে সাহায্য না পেয়ে এক প্রতিবেশীর মাধ্যমে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের বকুল মহিলা সমিতির সন্ধান পান। সেখান থেকে ২০১৮ সালে প্রথমে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে শুরু করেন ১০ কাঠা জমিতে ড্রাগন চাষ। পাশাপাশি শরিফুল শুরু করেন ছাগলের ব্যবসা। ধীরে ধীরে ফলন বাড়ে, ব্যবসায়ও আসে লাভ।
২০২১ সালে আবার ওয়েভ ফাউন্ডেশন থেকে ৪ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে ১ বিঘা জমিতে ড্রাগন চাষে নামেন। ছাগল বিক্রি করে ২টি গরু কিনে মোটাতাজাকরণ শুরু করেন। দ্রুতই ১ বিঘা জমি কিনে ফেলেন। পরে তাদের খামারে ২৭ কাঠা ড্রাগন ও ১ বিঘা মাল্টা চাষ শুরু হয়। ২০২৪ সালে আরও ৫ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে নতুন ১ বিঘা জমি কিনে নেন। বর্তমানে তাদের মাসিক আয় ৫০-৬০ হাজার টাকা। এখন তাদের নিজস্ব ২ বিঘা জমি যার বাজার মূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা। আঙ্গুর বেগম ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “ওয়েভ ফাউন্ডেশনের হাত ধরেই আমাদের এই পথ চলা। এখন স্বপ্ন দেখি আরও বড় খামার গড়ে তুলবো, যেখানে শুধু আমাদের নয়, গ্রামের আরও অনেকের কর্মসংস্থান হবে।” আজ আঙ্গুর বেগম ও শরিফুল ইসলামের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। ড্রাগন ও মাল্টা চাষ দেখতে এবং শিখতে অনেকেই আসছেন। অনুপ্রাণিত হয়ে নতুন উদ্যোক্তারাও এগিয়ে আসছেন।