“দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হইছে, আমার পরিবারের পানিবাহিত রোগ কমে যাওয়ায় আর্থিক ও শারীরিক দিক দিয়ে এখন অনেক ভালোভাবে দিন পার করছি। ধন্যবাদ ওয়েভ ফাউন্ডেশনের লোকমোর্চা কমিটিকে। তারা ছাড়া এই কাজটি সম্ভব হতো না”। এভাবে নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করছিলেন মাগুরা জেলার রাজাপুর ইউনিয়নের প্রতিবন্ধী বাসিন্দা স্বপন কুমার।
মহম্মদপুর উপজেলার এ ইউনিয়নের রাহাতপুর গ্রামের অধিকাংশ বাড়ির টিউবওয়েলের পানিতে মাত্রাতিরিক্ত আয়রন থাকায় প্রায় ২ কি. মি. দূর থেকে অন্যান্যদের মত শারীরিক প্রতিবন্ধী স্বপন কুমার বিশ্বাসকেও খাবার পানি সংগ্রহ করতে হতো। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করতে না পারায় অধিকাংশ সময়ই তার পরিবারকে আয়রণযুক্ত পানি ব্যবহার করতে হতো। ফলে প্রায়ই তার পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হতো, যা আর্থিকভাবেও তাকে চরম ক্ষতিগ্রস্ত করে। এ সমস্য সমাধানের জন্য তিনি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ চেয়ারম্যানের সাথে বার বার দেখা করেন, কিন্তু কোনো লাভ হয় না। ফলে দিনের পর দিন তার দূর্দশা আরো বাড়তে থাকে। অবশেষে স্বপন কুমার রাজাপুর ইউনিয়ন লোকমোর্চা সভাপতি লক্ষ্মী নারায়ণ চন্দ্র দাস এবং সম্পাদক জিন্নাতুল আলম এর সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে তার দুরাবস্থার কথা তুলে ধরেন।
বিষয়টি আমলে নিয়ে লোকমোর্চার সভাপতি, সম্পাদক ও সদস্য আসাদুজ্জামান স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এবং উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী, জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কাছে রাহাতপুর গ্রামের পানীয় জলের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। এক পর্যায়ে এলাকার পানীয় জলের সংকটের কথা বিবেচনায় নিয়ে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের লোকাল গভর্নমেন্ট সাপোর্ট প্রজেক্ট-এলজিএসপি ৩ এর আওতায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ডিসেম্বর ২০২০ রাহাতপুর বাজারে সেটি বাস্তবায়িত হলে প্রতিবন্ধী স্বপনের বাড়িতে একটি পানির ট্যাপ পয়েন্ট বসানো হয়। ফলে দূর হয় স্বপনের দীর্ঘদিনের পানীয় জলের সমস্যা।
রাজাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “আমি ব্যস্ত মানুষ, সবসময় সব কথা মনে থাকে না। এলাকার সমস্যা সমাধানে লোকমোর্চার ভূমিকা অনস্বীকার্য। যার উদাহরণ রাহাতপুর গ্রামের মানুষের পানীয় জলের সমস্যার সমাধান করতে পারা। ধন্যবাদ, লোকমোর্চার সকল সদস্যদেরকে।”