২০২১ সালের এপ্রিলে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার কুলপালা গ্রামে ১৫ শতক জমি ২০ বছরের জন্য লিজ নিয়ে সংস্থা একটি সৌর সেচ পাম্প স্থাপন করে। সৌর পাম্পের কারণে এলাকার কৃষকদের সেচ কাজে অনেক সাশ্রয় হয়েছে। আগে যেখানে ১ বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষে পানির জন্য খরচ হতো ৪৫০০ টাকা। এখন সেখানে খরচ হয় মাত্র ৩০০০ টাকা। এই পাম্পেরই অব্যবহৃত জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে পরিকল্পিত ছাগল খামার যা নারীদের কর্মসংস্থানেও ভূমিকা রাখছে।
এই উভয় সফলতা কুলপালা গ্রামের কৃষকদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। একদিকে ডিজেল পাম্প ব্যবহারের অসহনীয় কষ্ট থেকে কৃষকরা মুক্তি পেয়েছে। অন্যদিকে ৬০টি বিভিন্ন জাতের ছাগলের সমন্বয়ে গড়ে তোলা খামারটি এ গ্রামে একটি অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। পাম্প অপারেটর মফিজ বলেন, “নিয়মিত আয়ের পাশাপাশি এই ছাগল খামার অসহায় গরিব নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে।”
পাম্প থেকে ছাগলের খামারের জন্য পানি ব্যবহারসহ সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক ফ্যান এবং রাতে নিরাপত্তার জন্য বাতির ব্যবস্থা করা হয়। ২০টি ছাগল দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে খামারে ২৫টি মা ছাগল ও ৩৫টি ছোট-বড় ছাগল মিলিয়ে প্রায় ৬০টি ছাগল আছে। এর মধ্যে ১০টি ছাগল বিক্রি করে প্রায় ৭০ হাজার টাকা আয় হয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে খামার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাম্প এলাকার পার্শ্ববর্তী ৩ জন অসহায় গরিব নারীকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যারা আগে অন্যের বাড়িতে কাজ করতেন। এই ৩ জনের মধ্যে ১ জনের অর্থনৈতিক অবস্থা বেশ শোচনীয়, তার স্বামী ও সন্তান দুজনই প্রতিবন্ধী। ছাগল খামারে নতুন কাজ পেয়ে তারা এখন অনেক খুশি।
সৌর পাম্পের উদ্যোগ এলাকার কৃষকদের আশা জাগানোর পাশাপাশি এখানকার ছাগল খামার অনেক দরিদ্র নারীকে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখাচ্ছে। অনেকেই সংস্থা থেকে আগ্রহের সাথে কারিগরি সহায়তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ নিচ্ছেন।
সংস্থার প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ প্রকাশ করে কয়েকজন দরিদ্র নারী বলেন, “আমাদের মত পিছিয়ে পড়া মানুষের জীবনমান উন্নয়ন, আত্মবিশ্বাস গঠন এবং সাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্রে ওয়েভ ফাউন্ডেশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।”