ফজলুর রহমান (৭০) দীর্ঘদিন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার সীমান্ত ইউনিয়নের নিজ গ্রাম গঙ্গাদাসপুরে চায়ের দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। বয়সের ভার এবং অর্থাভাবে এক সময় তিনি দোকানটা বন্ধ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু হঠাৎ তিনি জানতে পারেন, ওয়েভ ফাউন্ডেশন এই ইউনিয়নের একজন প্রবীণ চায়ের দোকানীকে কিছু আর্থিক অনুদান প্রদান করবে। তবে শর্ত হলো চা-দোকানটি গ্রামের প্রবীণ জনগোষ্ঠীর বসার উপযোগী হতে হবে।

শর্ত মেনে অন্যান্য প্রবীণের মতো ফজলুর রহমানও আবেদন করেন। ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের চায়ের দোকানদারদের মধ্যে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে তিনি নির্বাচিত হন। ফজলুর রহমান অনুদান হিসেবে পাওয়া ১৫ হাজার টাকা দিয়ে কাঁচামাল কেনাসহ চায়ের দোকানটি নতুন করে সাজান। দোকানের নাম দেন ‘প্রবীণ বান্ধব সোনালী টি স্টল’। গত ১৫ জুন জীবননগরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুল ইসলামের উপস্থিতিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গসহ চায়ের দোকানটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়।

আবেগজড়িত কন্ঠে ফজলুর রহমান বলেন, “আমার দোকানে প্রত্যেক দিন প্রায় ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা বিচাকিনা হয়। আমি প্রতিদিনের আয় থেকে পরিবারের ব্যয় মিটিয়ে মাসে ৫০০ টাকা ব্যাংকেও জমা করছি। প্রবীণ আড্ডায় মুখরিত হয়ে ওঠে আমার চায়ের দোকান। আমার মতো একজন প্রবীণও যে আয়ের সাথে যুক্ত হয়ে সংসারের মূল্যবান মানুষ হয়ে উঠতে পারে সোনালী টি স্টল তার বাস্তব উদাহরণ।”

উল্লেখ্য, ২০২০ সালে এই ইউনিয়নের গয়েশপুর গ্রামে সংস্থার উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে একজন প্রবীণকে সামান্য আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে শুরু হয় প্রবীণ বান্ধব টি স্টলের ধারণা। পরবর্তীতে প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির অন্যান্য ইউনিয়নের প্রবীণরাও নিজ উদ্যোগে বিষয়টির বাস্তবায়ন শুরু করেন। দাতা সংস্থা পিকেএসএফ-এর দৃষ্টিগোচর হলে একদল প্রতিনিধি প্রবীণ বান্ধব টি স্টল পরিদর্শন করেন। তাদের প্রস্তাবের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ২০০ ইউনিয়নে পরিচালিত প্রবীণ কর্মসূচির মূল স্রোতে স্থান পায় ওয়েভ ফাউন্ডেশন থেকে শুরু হওয়া প্রবীণ বান্ধব টি স্টলের এই নতুন ধারণা।

Contact Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Not readable? Change text. captcha txt