গত ১৯ নভেম্বর ২০২১ ছিল বিশ্ব টয়লেট দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল Valuing Toilet, অর্থাৎ টয়লেটকে মূল্যায়ন। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘সকলের জন্য টেকসই পানি এবং স্যানিটেশন সুবিধা ত্বরান্বিতকরণ-এ্যাকসেসÕ প্রকল্পের উদ্যোগে গত ২০ নভেম্বর সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের প্রায় ১২৫০ জনের অংশগ্রহণে একটি অনলাইন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সংস্থার উপ-নির্বাহী পরিচালক আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন চুয়াডাঙ্গা জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. আজিজুর রহমান, ওয়াটারডটওআরজি-এর সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার আবু আসলাম ও প্রোগ্রাম অফিসার সৌম্যশ্রী চট্টোপাধ্যায়, প্রথম আলো চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি শাহ্ আলম সনি এবং আলমডাঙ্গা উপজেলাধীন ডামুশ কিশোরী ক্লাবের সভাপতি মিশৌরি মুনমুন। প্রকল্পের মনিটরিং সমন্বয়কারী তৌফিক হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্রকল্প সমন্বয়কারী শাহেদ জামাল। এছাড়া চুয়াডাঙ্গা জেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চুয়াডাঙ্গা মহিলা কলেজ, শ্যামপুর মহিলা কলেজ, মাথাভাঙ্গা ক্ষুদ্রঋণ মহিলা সমিতি ও জবা মহিলা সমিতির প্রতিনিধিসহ ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর কমিউনিটি অর্থায়ন কর্মসূচির অনেকেই সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন।
অতিথি বক্তব্যে প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান বলেন, ‘স্যানিটেশনের দিক থেকে প্রতিবেশী দেশের চেয়ে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। এখন প্রতিটি বাড়িতে টয়লেট রয়েছে। কেউ আর খোলা জায়গায় মল ত্যাগ করে না। এ জন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।’ অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান বলেন, ‘পরিবার পর্যায়ে উন্নতি হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে স্যানিটেশন ব্যবস্থা এখনো অনেক দূর্বল রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে আমাদের আরও সচেতন ভূমিকা পালন করতে হবে।’ ওয়াটারডটওআরজি প্রতিনিধি আবু আসলাম বলেন, ‘স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্মএলাকায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। এতে করে গ্রামীণ দরিদ্র বিশেষ করে নারী ও শিশুরা সুস্থ জীবনযাপন করছে।’
সমাবেশে দুজন ওয়াশ ঋণগ্রহীতা তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, ‘স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট আমাদের জীবনে সম্মান ও মর্যাদা বয়ে এনেছে।’ আলোচনায় অংশ নিয়ে দ্বীপ স্যানিটারির স্বত্ত্বাধিকারী বিপ্লব হোসেন বলেন, ‘আমরা প্যাকেজ আকারে বাড়িতে টয়লেট স্থাপন করে দিই। এতে সদস্যরা সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ীভাবে বাড়িতে বসে টয়লেট স্থাপন করাতে পারেন।’ শ্যামপুর কিশোরী ক্লাবের সদস্যরা অপর্যাপ্ত ও অস্বাস্থ্যকর টয়লেট থাকার কারণে এলাকার নারী ও কিশোরীরা মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি নিয়ে জীবন যাপন করছে বলে মতামত ব্যক্ত করেন।
সমাবেশে আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন সংস্থার সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নাহিদ ফাতেমা তামান্না এবং স্যানিটেশন বিষয়ক সঙ্গীত পরিবেশন করেন ইসরাইল হোসেন টিটু। অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত অংশগ্রহণকারীরা এ ধরনের ব্যতিক্রমী উদ্যোগের জন্য ওয়েভ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে এ কার্যক্রমের পরিধি আরও বাড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ জানান।