জীবন সংগ্রামের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত জীবননগর উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের মৃত আমীর হোসেনের ৬৭ বছর বয়সী বিধবা স্ত্রী কদবানু বেগম। স্বামীর মৃত্যুর পর প্রায় ২০ বছর ধরে আলীপুর রাখালশাহ্ বাজারে অল্প পুঁজি দিয়ে ছোট্ট দোকান চালিয়ে জীবন চালাচ্ছিলেন কদবানু। একমাত্র উপার্জনকারী ছেলে দুর্ঘটনায় শারীরিকভাবে অসুস্থ হলে এ আয় দিয়ে সংসার চালানো দুর্বিসহ হয়ে পড়ে। এমন সময় ওয়েভ ফাউন্ডেশন পরিচালিত ‘সমৃদ্ধি ও প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি’র আওতায় ইউনিয়ন প্রবীণ কমিটি কর্তৃক কদবানু বেগমকে প্রবীণ সোনালী উদ্যোগ টি-স্টল স্থাপনে অনুদান দিতে নির্বাচন করা হয়।
এপ্রিল, ২০২২ মাসে কদবানুকে কর্মসূচির বরাদ্দকৃত ১৫ হাজার টাকা দেয়া হয়, যা দিয়ে গ্যাসের চুলা, কেটলি, কাপ, ট্রে, টেবিল-বেঞ্চ, চা-পাতা, চিনি-বিস্কুটসহ অন্যান্য উপকরণ ক্রয় করে নতুনভাবে দোকান সাজিয়ে চালু করেন। এর আগে শুধুমাত্র কলা-বিস্কুট বিক্রি করতেন। এখন চা-বিস্কুট, কলা, পাউরুটিসহ পান, ডিম ও অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফলও বিক্রি করেন। ফলে দোকানে সব ধরনের ক্রেতা আসেন।
বয়স হওয়ার কারণে প্রেসার ও ডায়াবেটিসের ঔষধ খেতে মাসে প্রায় ২০০০ টাকা লাগে তার। সংসারের সকল খরচ নির্বাহ করার পরেও এক বছরে কদবানু বিশ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছেন। কদবানু বলেন, Ôওয়েভ থেকে চায়ের দোকান করে দেয়ায় প্রতিদিন গড়ে ৫০০ টাকা আয় হচ্ছে এবং বর্তমানে দোকানে প্রায় এক লক্ষ টাকার মালামাল আছে। এই দোকান থেকেই চিকিৎসাসহ সংসারের অন্যান্য খরচ চলছে।‘
কদবানু আরও বলেন, “যে কদিন শরীরে শক্তি থাকে এভাবেই খেটে খাবো তবু অন্যের কাছে হাত পাতবো না।’ প্রতিবেশীসহ সমাজের অনেক প্রবীণের কাছে তিনি এখন অনুকরণীয়। তার এলাকার অসহায় নারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “শারীরিক সক্ষমতা থাকলে পরিবার ও সমাজের বোঝা হয়ে না থেকে কাজ করে খেটে খাও, মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকো।’