চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বলেশ্বরপুর গ্রামের কোহিনুর খাতুন গাভী পালনের মাধ্যমে দারিদ্র্যকে জয় করে আজ একজন সফল উদ্যোক্তা। দরিদ্র পরিবাবের সন্তান কোহিনুর (৩৯), মাত্র ১২ বছর বয়সে বাবা-মায়ের চাপে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে বাধ্য হন। বিয়ের পরপরই তিনি বুঝতে পারেন স্বামীর সংসারে স্বাচ্ছন্দ্য বলে কিছু নেই, সারাক্ষণ শুধু অভাব-অনটন। অসহায় কিশোরী কোহিনুর সংসারের এ দুরাবস্থার কথা বাবা-মাকে জানালে তারাও আর্থিকভাবে কোনো সহযোগিতা করতে পারেন না।
এ অবস্থায় কোহিনুর তার স্বামী আজিজুল হকের সাথে পরামর্শ করে ২০১৩ সালে ২টি গাভী গরু কিনে গাভী পালন কার্যক্রম শুরু করেন। গাভী পালন লাভজনক হওয়ায় গরুর সংখ্যা বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা করেন এবং ওয়েভ ফাউন্ডেশনের ঘোলদাড়ী ইউনিটের বলেশ^রপুর সুরভী সমিতিতে ভর্তি হয়ে পুঁজি হিসেবে ৩০ হাজার টাকা ঋণ নেন। সেই থেকে এ পর্যন্ত কোহিনুর ওয়েভ থেকে ৭ দফায় ঋণ গ্রহণ করে পর্যায়ক্রমে খামার বাড়িয়ে চলেছেন। বর্তমানে তিনি ওয়েভ থেকে ১ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়েছেন এবং তার খামারে বর্তমানে ৩৭টি গরু রয়েছে। খামার পরিচর্যার জন্য সার্বক্ষণিক একজন শ্রমিকও রেখেছেন। গাভী পালন করে কোহিনুর বছরে প্রায় ২.৫ লক্ষ টাকা মুনাফা করছেন। কোহিনুরের সংসারে এখন স্বচ্ছলতা এসেছে। খামারের আয় থেকে দুটি মেয়েকে ভাল পরিবারে বিয়ে দিয়েছেন এবং একমাত্র ছেলেকে পড়াশোনা করাচ্ছেন।
কোহিনুর-আজিজুল হক এখন বলেশ্বরপুর গ্রামের একটি ছোট্ট প্রেরণার নাম। দারিদ্র্যকে জয় করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখানো এবং তা বাস্তবায়নে দীর্ঘ সময় ধরে পাশে থাকার জন্য কোহিনুর খাতুন ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। কোহিনুর বলেন, “সংসার জীবনের প্রথম দিকের কথা মনে পড়লে কষ্টে আঁতকে উঠি, আবার বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে পরম শান্তি পাই।”