একটি ন্যায্য ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার রূপকল্প নিয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় কাউকে পিছনে রেখে নয় এমন লক্ষ্য বাস্তবায়নে Empowering left behind minority communities to effectively participate in the development process of Bangladesh- ELMC প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। যার প্রধান উদ্দেশ্য  হল পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।

স্থানীয় পর্যায়ে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী যাতে তাদের অধিকার বা দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারে সে জন্য এই প্রকল্পের আওতায় কমিউনিটিতে নেতৃত্বদানকারী/প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে উপজেলা পর্যায়ে ৭৩টি এডভোকেসি নেটওয়ার্ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। গত এপ্রিল ২০২২ এ যশোর, রাজশাহী, নওগাঁ, সিলেট, হবিগঞ্জ ও মৌলভিবাজার জেলায় এডভোকেসি নেটওয়ার্ক সদস্য এবং সিএসও সদস্যদের ‘ত্রৈমাসিক সভা’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। যেখানে উপস্থিত সদস্যরা পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ে মিলিতভাবে কাজ করার আশ্বাস প্রদান করেন। অংশগ্রহণকারী ১৫০ জনের মধ্যে ১১০ জন পুরুষ, ১৬ জন নারী এবং ২৪ জন হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়াও প্রকল্প কার্যক্রমের অংশ হিসেবে কর্মএলাকার প্রতিটি উপজেলাতে এডভোকেসি নেটওয়ার্ক সদস্যদের জন্য ‘মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়ন, সুশাসন ও গণতন্ত্র’ বিষয়ে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নেটওয়ার্কগুলো সরকারি-বেসরকারি সেবা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সাথে লক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে লবিং, এডভোকেসি এবং বিভিন্ন ধরনের সংলাপ আয়োজনে পারদর্শী হয়ে উঠবে। এসব প্রশিক্ষণে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা, উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ-পরিচালকসহ স্থানীয় সরকারের প্িরতনিধি হিসেবে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফ্যাসিলিটেটর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। প্রশিক্ষকগণ বিষয় ভিত্তিক আলোচনার পাশাপাশি এডভোকেসি নেটওয়ার্ক সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, “এ নেটওয়ার্কের উদ্দেশ্যসমূহ তখনই সফল হবে, যখন আমাদের লক্ষিত জনগোষ্ঠী উপলব্ধি করবে যে- রাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সেবা, ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও নিরাপত্তা এবং সুশাসন পাওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে সচেতনতা এবং সংগঠিত হওয়া।”

এডভোকেসি নেটওয়ার্ক সদস্যরা শুধুমাত্র সরকারি সেবাগ্রহণকারী হিসেবে নয় বরং সকল ক্ষেত্রে একজন সক্রিয় নাগরিক হিসেবে ভূমিকা পালন এবং অধিকারের আলোকে দরিদ্র, প্রান্তিক ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীসহ সকল মানুষের জীবনমান উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা রাখবে। এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তাগণ এডভোকেসি নেটওয়ার্ক সদস্যদের আশ্বাস প্রদান করেন যে, এই প্রকল্পের জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ করে দলিত, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী এবং হিজরা ও ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার বাস্তবায়নের জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করবেন। ২৫ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা এডভোকেসি নেটওয়ার্ক কমিটিগুলো পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়নে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে এবং লক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকার আদায়ের কণ্ঠস্বর হয়ে উঠবে।

Contact Us

We're not around right now. But you can send us an email and we'll get back to you, asap.

Not readable? Change text. captcha txt