ফজলুল হক ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন দেখতেন কিভাবে পরিবারে স্বচ্ছলতা আনা যায়। একদিন ছোট ভাই মনিরের সাথে চানাচুরের কারখানা করার বিষয়ে আলোচনা করেন। যেমন চিন্তা তেমন কাজ; দেরি না করে স্বল্প পরিসরে ৩ শতক জমির উপর নিজ পরিবারের ২জন এবং বাইরে থেকে আরো ২জন কর্মী নিয়োগ করে কারখানা চালু করেন।
বাবা দরিদ্র কৃষক হওয়ায় অর্থাভাবে এইচএসসি পাশের পর আর লেখাপড়া হয়নি মো. এস এম ফজলুল হকের (৫৫)। ২২ বছর বয়সে নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার নিজের এলাকা চাঁচকৈড় গ্রামের বাজারপাড়ার মোছা. রওশনারার সাথে তার বিয়ে হয়। ছোট চানাচুরের কারখানাটি কিভাবে আর একটু বড় করা যায় এ বিষয়ে স্ত্রীর সাথে আলাপ করলে, বুঝতে পারেন পুঁজির ঘাটতি এক্ষেত্রে প্রধান বাধা। তিনি চারিদিকে পুঁজির অনুসন্ধান করতে থাকেন। এমন সময় প্রতিবেশি বন্ধু মো. হাবিবুর রহমানের সাথে কথা হলে ফজলুল ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর কথা জানতে পারেন।
তখনই দেরি না করে ৭৪-চাঁচকৈড় ইউনিট অফিস পরিচালিত চাঁচকৈড় বাজার পুরুষ সমিতির সদস্য হন তিনি। সমিতি থেকে ২০১৭ সালে ৮০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে ১ বিঘা জমি বন্ধক নেন এবং কারখানাটি বড় করেন। চানাচুর কারখানা থেকে অর্জিত আয় দিয়ে তিনি সফলভাবে প্রথম দফার ঋণ পরিশোধ করেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে যখন প্রয়োজন হয়, ওয়েভ ফাউন্ডেশন থেকে তিনি ঋণ গ্রহণ করেন। এভাবে তার ব্যবসার পরিধি ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে থাকে এবং পরিবারেও স্বচ্ছলতা আসে। পরবর্তীতে ফজলুল নিজের নামে ৫ শতক জমি ক্রয় করে চানাচুরের কারখানা আরও বড় করেন। বর্তমানে কারখানাটিতে মোট ১৪ জন শ্রমিক কাজ করছে। কারাখানার উৎপাদিত চানাচুর দেশের বিভিন্ন জেলায় খুচরা ও পাইকারীভাবে বিক্রি হচ্ছে।
এখন ফজলুল হক প্রতি মাসে প্রায় ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা নীট আয় করছেন। তার বড় মেয়ে ডাক্তারি পড়ছে। ফজলুল নিজ মুখে বলেন, ‘ওয়েভ ফাউন্ডেশন পাশে ছিল বলে আজ আমার স্বচ্ছলতার স্বপ্নপূরণ হইছে, ছেলেমেয়েদের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে পারছি।’