গত ২২ নভেম্বর ২০২০ ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর দৌলতপুর-৩১ ইউনিটের (কুষ্টিয়া জেলা) সোনালী সমিতি থেকে দেবতা রাণী ৩০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে নিজ বাড়িতে ল্যাট্রিন স্থাপন করেন। এখন তার বাড়ির পরিবেশ বেশ স্বাস্থ্যকর, ছেলেসহ পরিবারের অন্যান্যরা আগের মত অসুস্থ হয় না এবং ডাক্তারের খরচও লাগে না।
ফলে সংসারে স্বচ্ছলতা এবং স্বাচ্ছন্দ্য দুই-ই বেড়েছে। কিন্তু কিছুদিন আগে এরকম পরিস্থিতি ছিল না। দেবতা রাণীর স্বামী সুশীল দাস একজন সেলুন কর্মচারী। বিয়ের ৩ বছর পর তাদের ১টি ছেলে সন্তান হয়। শুরুতে ভাল থাকলেও বয়স বাড়ার সাথে সাথে ছেলেটি প্রায়ই অসুস্থ হতো এবং ডাক্তারের কাছে ঘন ঘন নিয়ে যেতে হতো। সন্তানের অসুস্থতার জন্য একদিকে টাকা খরচ হতো, অন্যদিকে স্বামী ঠিকমতো কাজে যেতে পারতেন না। সাংসারিক অশান্তি আর খরচ বহনের দুশ্চিন্তায় ভয়াবহ দিন কাটছিল তার। হঠাৎ এক দিন দৌলতপুর ইউনিটের সোনালী ঋণ সমিতির সভাপতি সুন্দরী বেগমের সাথে আলোচনা হয় দেবতা রাণীর।
সব শুনে সমিতির সভাপতি তাকে বলেন, “তোমার ছেলের ঘন ঘন অসুস্থতার মূল কারণ বাড়ির নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ। ভাঙ্গা ল্যাট্রিন এবং দূষিত পানি বের হওয়ার সঠিক ব্যবস্থা না থাকার কারণে মশা-মাছি ও অন্যান্য পোকা-মাকড়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের জীবাণু খাবার, থালা-বাসন, পোশাকসহ ইত্যাদি জায়গায় ছড়াচ্ছে। এ অবস্থা থেকে বের হতে সর্বপ্রথম তোমাদের স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহার করতে হবে এবং ময়লা পানি বের হওয়ার সুব্যবস্থা করতে হবে।”
বিষয়টি নিয়ে দেবতা রাণী তার স্বামীর সাথে কথা বলেন এবং বাড়িতে ল্যাট্রিন স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেন। এ উদ্যোগে প্রধান বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান। দেবতা রাণী ওয়েভ ফাউন্ডেশনের এ ইউনিটে পুনরায় যোগাযোগ করে জানতে পারেন, সংস্থা তার সদস্যদের ল্যাট্রিন ও টিউবওয়েল স্থাপনের জন্য ঋণ দিচ্ছে। এরপর সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তিনি স্বাস্থ্যকর ল্যাট্রিন স্থাপন করেন। দেবতা রাণী আনন্দের সাথে বলতে থাকেন, “পরিবার থেকে এখন রোগ-ব্যাধি বিদায় নিয়েছে, স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে দিন কাটছে আমার। ভাল পরামর্শ ও সহায়তা দেয়ার জন্য ওয়েভ ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ।”