সাম্প্রতিক সময়ে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাড়তি চাপ সামলাতে সমাজের প্রায় সর্বস্তরের মানুষের হিমসিম অবস্থা, বিশেষত প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নিম্ন আয়ের মানুষের। বিদ্যমান বাস্তবতায়, খাদ্য নিরাপত্তার প্রেক্ষিতে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এ প্রেক্ষাপটে গত ২২ এপ্রিল খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও খাদ্যগ্রহণে প্রভাব’ শীর্ষক জরিপের ফলাফল নিয়ে এক ভার্চুয়াল সেমিনার আয়োজন করে। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি।
সম্মানীয় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড. সায়েমা হক বিদিশা, অধ্যাপক, অর্থনীতি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা পরিচালক, সানেম এবং আবুল কালাম আজাদ, কর্মসূচি পরিচালক, দক্ষিণ এশিয়া, ইকো কোঅপারেশন। এতে স্বাগত বক্তব্য ও সঞ্চালনা করেন মহসিন আলী, সাধারণ সম্পাদক, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও নির্বাহী পরিচালক, ওয়েভ ফাউন্ডেশন। ‘দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও খাদ্যগ্রহণে প্রভাব’ শীর্ষক জরিপের সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করেন ড. নাজনীন আহমেদ, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, বিআইডিএস। এছাড়া আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন এস এম নাজের হোসেন, সহ-সভাপতি, কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব), বিভাগীয় প্রতিনিধি ও সভাপতি, চট্রগ্রাম জেলা কমিটি, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এবং মোসাম্মাৎ সুলতানা রাজিয়া খাতুন, সভাপতি, দিনাজপুর জেলা কমিটি, খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও প্রধান নির্বাহী, এমবিএসকে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, “আমরা একটি অস্বাভাবিক সময় অতিক্রম করছি। মানুষের আয় কমে গেছে, পাশাপাশি খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি দরিদ্র মানুষকে বিপদগ্রস্ত করেছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি, পেঁয়াজসহ দ্রব্যমূল্য বেড়ে চলেছে, তার একটা প্রভাব দেশের বাজারেও পড়ছে। দাম কমানোর জন্য খাদ্য, কৃষি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় যার যার জায়গা থেকে কাজ করছে। আমরা মনিটরিং করছি, কিন্তু পর্যাপ্ত লোকবল আমাদের নেই।” এছাড়াও এ ধরনের সময়োচিত আলোচনা আয়োজনের জন্য তিনি নেটওয়ার্ককে ধন্যবাদ জানান। সম্মানীয় আলোচকের বক্তব্যে ড. সায়েমা হক বিদিশা বলেন, “যেসব মানুষ দারিদ্র্য ঝুঁকিতে রয়েছেন, বর্তমান করোনা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তারাও খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকিতে পতিত হচ্ছেন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের সদিচ্ছা থাকলেও দীর্ঘমেয়াদি কার্যক্রম দেখা যায় না। সেজন্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কমিশন গঠন করা দরকার। যে কমিশন গবেষণার আলোকে সুপারিশ তুলে ধরবে এবং বাজার মনিটরিংয়ে ভূমিকা রাখবে।”