চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি সেবার সমস্যা এবং সম্ভাবনা নিয়ে অক্টোবর ২০২৩ লোকমোর্চার একটি প্রশিক্ষিত দল সুনির্দিষ্ট প্রশ্নপত্রের ভিত্তিতে বিভিন্ন ইউনিয়নের নানান শ্রেণী-পেশার সেবাগ্রহীতা এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে সামাজিক নিরীক্ষা পরিচালনা করে। নিরীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে উল্লিখিত খাতের বিশেষ সমস্যাসমূহ সমাধানে লোকমোর্চা বিশ্লেষণ প্রতিবেদনে পৃথক দাবিনামা তৈরি করে। চুয়াডাঙ্গা জেলা লোকমোর্চার সভাপতির নেতৃত্বে গত ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যায়ক্রমে জেলার সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা ও জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমানের কাছে প্রতিবেদন দাখিল এবং সেগুলো বাস্তবায়নে লবিং করা হয়।
গুরুত্বপূর্ণ দাবিসমূহের মধ্যে সকল উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারসহ অপারেশন কার্যক্রম চালু ও নিয়মিতকরণ এবং মেডিকেল অফিসারের পোস্টিং নিশ্চিতকরণ। কৃষিখাতে জেলাস্থ সকল ডিলার পয়েন্টে সারের ন্যায্যমূল্য তালিকা টাঙানোসহ খুচরা মূল্যে কৃষকের নিকট সার বিক্রি ও বিক্রয়কেন্দ্রে নিন্মমানের ভেজাল সার, বীজ ও কীটনাশক বিক্রি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ। শিক্ষা খাতের সার্বিক মানন্নোয়নসহ বিদ্যালয়গুলো নিয়মিত মনিটরিং এবং গাইড বইয়ের পরিবর্তে পাঠ্যবইয়ে পাঠদান। জেলা লোকমোর্চার সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক প্রথম আলো’র প্রতিনিধি শাহ আলম সনি দাবিনামাসমূহ উপস্থাপন করেন এবং লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দগণ আলোচনা করেন। এ ধারাবাহিকতায় গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ লোকমোর্চা ‘স্থানীয় কৃষি ও স্বাস্থ্য সেবায় সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সংলাপ’ আয়োজন করে। দুটি ইস্যুতে ২১টি প্রশ্নের মধ্যে কৃষি খাতে ১৬টি ও স্বাস্থ্য খাতে ৫টি বিদ্যমান সমস্যা এবং সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগ কর্তৃক সমাধানে করণীয় বিষয়ে বিশ্লেষণাত্মক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সংস্থার প্রোগ্রাম এডভাইজার আব্দুস শুকুর।
প্রতিবেদন ও লবিংয়ে উপস্থাপিত দাবিগুলো তুলে ধরলে সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা আফরিন বিনতে আজিজ এবং সদর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ আওলিয়ার রহমান সমস্যা সমাধানে তাদের সুনির্দিষ্ট মতামত তুলে ধরে বলেন, “সকল উপজেলায় জনবল সংকটসহ সারের সংকট না থাকলেও পরিবহন ঠিকাদার, অসাধু কর্মকর্তা ও ডিলারদের কারসাজি, ডিলার নিয়োগে অনিয়ম ইত্যাদি অনস্বীকার্য। জেলার ৪টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকট, ৫০ শয্যার হাসপাতালে ৩১ শয্যার জনবল, জেলা শহর ছাড়া অ্যানেসথেসিয়া চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন না করা ইত্যাদি সীমাবদ্ধতার কারণে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ জনগণ।” এছাড়া তারা আরও বলেন, “যেহেতু বিষয়সমূহ আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও আমরা একই সাথে জানলাম, আশা করি যত দ্রুত সম্ভব আমাদের সাধ্যের মধ্যে সমন্বিতভাবে সমস্যাগুলো সমাধান করা হবে।”