খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের জরিপ: করোনাকালে দেশের ৯৮.৩ শতাংশ মানুষের জীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
করোনা ভাইরাসের বিস্তার নিয়ন্ত্রণে সরকার মার্চ মাসের শেষের দিকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। যদিও মে মাসের গোড়ার দিকে ব্যবসা-বাণিজ্যসীমিত আকারে চালু হয়, তবে অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। করোনা মহামারীর কারণে লকডাউন দ্বারা ৯৮.৩% দরিদ্র মানুষেরজীবনযাত্রা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কারো আয় হ্রাস পেয়েছে, কেউ চাকরি হারিয়েছে, দোকানপাট এবং ব্যবসায়িক কর্মকান্ডসহ আয়ের পথসম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার মুখোমুখিও হয়েছে অনেকে। যা ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’-এর ‘দরিদ্র মানুষের খাদ্য ও পুষ্টির উপর কোভিড ১৯-এর প্রভাব’ শীর্ষক পরিচালিত জরিপের ফলাফলে উঠে আসে। জরিপে আরও দেখা যায়, আয় না থাকায় প্রায় ৮৭% দরিদ্র মানুষ পর্যাপ্ত খাদ্য এবং পুষ্টিকরখাবারের ব্যবস্থা করতে অসুবিধায় পড়েছে। বিশেষত শিশু, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের পুষ্টির অবস্থা এখনও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।জরিপের বেশিরভাগ উত্তরদাতা প্রাক-কোভিড পরিস্থিতিতে দিনে তিনবেলা খাবার গ্রহণ করতেন। কিন্তু লকডাউন চলাকালীন সময়ে ৯৫% থেকে১০০% উত্তরদাতারা তিনবেলা খাবার গ্রহণ করতে সমস্যার মুখোমুখি হয়। এমনকি সাক্ষাতকার গ্রহণের পূর্ববর্তী এক সপ্তাহে ৫% দরিদ্র মানুষদিনে মাত্র এক বেলা খাবার খেতে পেরেছে।
বিগত ১৬ জুলাই ২০২০ জরিপের এই ফলাফল নিয়ে ‘খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ’ অনলাইনে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। খাদ্যঅধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফ-এর চেয়ারম্যান, ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে এবং খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এরসাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক, মহসিন আলীর সঞ্চালনায় এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতছিলেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম। এতে আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ-সিপিডি-এর গবেষণা পরিচালক, ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম; বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, ড. এস এম জুলফিকার আলী ও আইসিসিওকোঅপারেশন বাংলাদেশের কর্মসূচি প্রধান, মো. আবুল কালাম আজাদ। জরিপের তথ্য-উপাত্ত ও সুপারিশ উপস্থাপন করেন বিআইডিএস-এরসিনিয়র রিসার্চ ফেলো, ড. নাজনীন আহমেদ। আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন শেরপুর জেলা কমিটির সভাপতি নীলিম ম্রং, জামালপুর জেলাকমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই প্রমুখ।