এলাকার মানুষের যে কোনো সমস্যা বা প্রয়োজনে সুফিয়া বেগম স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসেন। ২০১৯ সালে রেসপন্স প্রকল্পের অধীন মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে কমিউনিটি গ্রুপ গঠনের সময় সকলের মতামতের ভিত্তিতে তিনি গ্রুপের সভাপতি নির্বাচিত হন। যদিও এর আগে কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমের সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন না।
স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে স্বতঃস্ফূর্ত ছিলেন বলে সুফিয়া বাবুখালী ইউনিয়ন লোকমোর্চারও সদস্য নির্বাচিত হন। ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রায়পুর গ্রামের দিনমজুর মো. কামাল হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগম (৩৫) একজন গৃহিণী। গত ১৯ জানুয়ারি ২০২১ ইউনিয়ন পরিষদ আয়োজিত ওয়ার্ড সভায় এলাকার অন্যান্যদের সঙ্গে তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন বাবুখালী ইউনিয়নের সচিব, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ। সভায় সুফিয়া বেগম এলাকার বেশ কয়েকজনের দুরবস্থার কথা উল্লেখ করে তাদের জন্য বিধবা ভাতা, বয়স্ক ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি কার্ডের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি তুলে ধরেন। যুক্তিসঙ্গতভাবে দাবি উত্থাপন করার কারণে উপস্থিত ইউপি সদস্য ও সচিব তার দাবিগুলো গ্রহণ করা হবে বলে মত প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে গত ২৪ জানুয়ারি সুফিয়া তার ওয়ার্ডের মো. তুরান শেখ (৪০) ও নাবিলা বেগমের (৭০) জন্য প্রতিবন্ধী ভাতা, ছবেদা বেগম (৬৫) ও ইকিলন বেগমের (৭১) জন্য বয়স্ক ভাতা এবং গোলজান বেগম (৪৫), ফুলবড়ু বেগম (৫৩), খুকী বিবি (৪৮) ও জরিনা বেগমের (৩৮) জন্য বিধবা ভাতার আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে যান। ইউনিয়ন পরিষদ আবেদনগুলো গ্রহণ করে এবং পরবর্তীতে তাদেরকে উল্লিখিত ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত করেন। নিজেদের নাম বিভিন্ন সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় উপকারভোগীরা এখন স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছেন। নাবিলা বেগম এ প্রসঙ্গে বলেন, “এ গ্রামে সুফিয়া ছিল বলে আজ আমি ৭০ বছর বয়সে এসেও এবার প্রতিবন্ধী ভাতার আওতায় এলাম। এতে আমি খুবই আনন্দিত।”
সুফিয়া বেগম বলেন, “আগে আমি কখনও ওয়ার্ড সভার কথা শুনিই নাই। ওয়েভ ফাউন্ডেশন-এর এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমে কমিউনিটি গ্রæপ ও পরে ইউনিয়ন লোকমোর্চার সাথে যুক্ত হয়ে এবং নিয়মিত সভায় উপস্থিত থাকার কারণে ইউনিয়ন পরিষদের সেবাগুলো সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আর সেজন্যই ওয়ার্ড সভায় উপস্থিত থেকে দাবি উত্থাপন করতে পেরেছি এবং এলাকার অসহায় ব্যক্তিদের পাশে থাকতে পেরে আমি অনেক খুশি।”