ওয়েভ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই একটি ন্যায্য ও সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার রূপকল্প নিয়ে বহুমুখী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সে ধারাবাহিকতায় ‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়’- এমন লক্ষ্য বাস্তবায়নে সংস্থা রাজশাহী, খুলনা ও সিলেট বিভাগের ৮ জেলায় ‘পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সক্রিয় অংশগ্রহণ (Empowering left behind minority communities to effectively participate in the development process of Bangladesh Project-ELMC) প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ক্রিশ্চিয়ান এইডের সহায়তায় প্রকল্পের উদ্যোগে গত ২২-২৩ ও ২৫ নভেম্বর ২০২২ জাতীয় জাদুঘর, শাহবাগ, ঢাকায় ‘মর্যাদাপূর্ণ জীবিকার লড়াই: পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জীবন ও জীবিকা’ বিষয়ক এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী দিনে একটি নীতি-সংলাপ এবং ২৫ নভেম্বর সমাপনী দিনে ‘নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ’কে কেন্দ্র করে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই ট্রান্সজেন্ডার এবং হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনের নানা প্রতিবন্ধকতার চিত্র তুলে ধরে প্রদর্শিত হয় একটি নাটিকা ।‘লিঙ্গ পরিচয় ও সক্ষমতার কারণে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর প্রতি পেশাগত ক্ষেত্রে সহিংসতা ও নিরাপত্তা ঝুকিঁ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য ও বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, ক্রিশ্চিয়ান এইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর পঙ্কজ কুমার, ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী, হেলভেতাস সুইস ইন্টারকোঅপারেশন বাংলাদেশের অপরাজিতা প্রকল্পের পরিচালক প্রশান্ত ত্রিপুরাসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজন।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, “পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে সরকারের যথেষ্ট সদিচ্ছা থাকলেও প্রক্রিয়াগত বিভিন্ন জটিলতার কারণে সেটা সবসময় যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয় না।” আলোচনায় অংশ নিয়ে ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী বলেন, “ট্রান্সজেন্ডার ও হিজড়া জনগোষ্ঠীর মানুষ সবসময় অবহেলিত এবং সমাজ থেকে বিতাড়িত। তাদেরকে এগিয়ে আনতে হলে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। তাদের পিছিয়ে রেখে সমাজ এবং রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারবে না।”
অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে দলিত, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, হিজড়া ও ট্রান্সজেন্ডার, চা-শ্রমিক এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দৈনন্দিন জীবন ও জীবিকায়নে বিদ্যমান বৈষম্যের বিভিন্ন দিক তুলে ধরার পাশাপাশি সরকারের নানা উদ্যোগ ও কিছু সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। উপস্থিত সকলেই একমত পোষণ করেন যে, “এসব জনগোষ্ঠীকে পিছিয়ে রেখে দেশের উন্নয়ন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।” প্রকল্পের সহযোগী সংগঠন ওয়েভ ফাউন্ডেশন, নাগরিক উদ্যোগ, বন্ধু সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি এবং ব্লাস্ট-এর প্রতিনিধি, অংশীজন ছাড়াও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, যুব-শিক্ষার্থীসহ আরো অনেক দর্শনার্থী এ আয়োজনে অংশ নেন।
