ওয়েভ ফাউন্ডেশন কর্তৃক বাস্তবায়িত ‘অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা শক্তিশালীকরণের মাধ্যমে সরকারি সেবাসমূহের দায়বদ্ধতা’ (রেসপন্স) প্রকল্পের অধীনে ‘কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে জরুরি অর্থ সহায়তা প্রদান’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে মোট ৩৯৫ জন উপকারভোগীকে অর্থ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। প্রকল্পটি মাগুরা জেলার শ্রীপুর ও মহম্মদপুর উপজেলায় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও ইউকেএইডের সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মোট তিনটি ধাপে যথাক্রমে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বর মাসে এ সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রত্যেক ধাপে ২৫০০ টাকা হিসেবে একেকজন নির্বাচিত উপকারভোগী পেয়েছেন মোট ৭৫০০ টাকা। প্রায় ৭২ শতাংশ উপকারভোগীর কাছে এ সহায়তা পৌঁছে গেছে ডিজিটাল পদ্ধতিতে অর্থাৎ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। বাকি উপকারভোগীরা তা পেয়েছেন হাতে-নগদে। গত ২৪ নভেম্বর শ্রীপুরের গয়েশপুর ইউনিয়ন পরিষদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মাগুরার জেলা প্রশাসক ড. আশরাফুল আলমের উপস্থিতিতে ৩০ জন উপকারভোগীর হাতে সরাসরি অর্থ সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে এ কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইয়াসিন কবীর, গয়েশপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আফছার উদ্দিন শেখ, মাগুরা জেলা ও শ্রীপুর উপজেলা লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এ কর্মসূচি শুরুর আগে প্রকল্পের সম্ভাব্য উপকারভোগীদের দীর্ঘ তালিকা থেকে প্রকৃত উপকারভোগী বাছাই প্রক্রিয়া ছিল বেশ জটিল। যথাযথ তালিকা তৈরিতে ইউনিয়ন পরিষদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ও কোভিডকালীন সহায়তা থেকে বাদ পড়েছেন এবং প্রকৃত অর্থে দুস্থ, বিধবা, জেলে, প্রতিবন্ধী কি-না তা যাচাই করা হয়েছে। স্বচ্ছতা বজায় রাখতে স্থানীয় ইউপি সদস্য, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও প্রকল্পের কমিউনিটি গ্রুপ সদস্যদের সমন্বয়ে ওয়ার্ড ভিত্তিক ‘অর্থ বিতরণ ও পর্যবেক্ষণ কমিটি’ গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, লোকমোর্চা ও সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলাকেন্দ্রীক ‘অভিযোগ প্রতিকার কমিটি’। অভিযোগ করার জন্য একটি মোবাইল নম্বরও সকলকে সরবরাহ করা হয়েছে। এ কমিটিগুলোর মাধ্যমে এখন পর্যন্ত দুইটি অভিযোগের নিষ্পত্তি করা হয়েছে। নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রমে উল্লিখিত কমিটিগুলোর সক্রিয় ভূমিকা পালনের পাশাপাশি কোথাও কোথাও সংশ্লিষ্ট উপজেলা জনপ্রতিনিধি, ইউপি চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তা, লোকমোর্চা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রত্যেক উপকারভোগীর কাছ থেকেই প্রাপ্তি স্বীকারপত্র ও মাস্টাররোলে স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে। সহায়তার অর্থ দিয়ে বেশিরভাগ উপকারভোগী খাদ্যের সংস্থান করলেও অনেকে চিকিৎসার খরচ যুগিয়েছেন, হাঁস-মুরগি-ছাগল কিনেছেন, ক্ষুদ্র ব্যবসার পুঁজির যোগান হিসেবে ব্যবহার করেছেন। এ উদ্যোগের জন্য উপকারভোগীদের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যক্তি ও সাধারণ মানুষের কাছে প্রশংসা পাচ্ছে ওয়েভ ফাউন্ডেশন।