গত ৯ জুন ২০২১, ”খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ” নেটওয়ার্ক কর্তৃক ”বাজেট ২০২১-২২: করোনাকালে জীবন ও জীবিকা” শীর্ষক এক ভার্চুয়াল ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এম. এ. মান্নান এমপি।
খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ-এর সভাপতিত্বে এ ওয়েবিনার সঞ্চালনা করেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মহসিন আলী। এতে সম্মানীয় আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর এবং ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের গবেষণা পরিচালক ড. সায়েমা হক বিদিশা। অনুষ্ঠানে আয়োজকদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ-এর খুলনা বিভাগীয় প্রতিনিধি ও যশোর জেলা কমিটির সভাপতি বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, বরিশাল বিভাগীয় প্রতিনিধি ও জেলা কমিটির সভাপতি আনোয়ার জাহিদ। এছাড়া নেটওয়ার্কের জেলা ও জাতীয় পর্যায়ের বেশ কিছু নেতৃবৃন্দ মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম. এ. মান্নান তাঁর বক্তব্যে বলেন, ”এবারের বাজেটে দারিদ্র্য ও ন্যায়বিচারকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, যেখানে নাগরিক হিসেবে জনমানুষের চাহিদার প্রতিফলন ঘটেছে। তবে জীবনচক্রের কথা বিবেচনায় নিয়ে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ঢেলে সাজানো প্রয়োজন। আর কর্মসূচির যথাযথ বাস্তবায়নে দরকার উপকারভোগীর সঠিক তথ্যভান্ডার।”
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. সায়েমা হক বিদিশা বলেন, শুধুমাত্র দরিদ্রদের কথা চিন্তা করলে হবে না। যারা অর্থনৈতিকভাবে নাজুক অবস্থায় রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নয়নে নীতিগত জায়গায় আমাদের কাজ করতে হবে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, এই করোনাকালে নিম্ন আয়ের মানুষের খাদ্য অধিকার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। অনেক মানুষ কর্মসংস্থান হারিয়ে বেকার হয়েছে। বিদ্যমান পরিস্থিতির উত্তরণে তিনি বেশ কিছু সুপারিশ তুলে ধরেন। সুপারিশসমূহ যথাক্রমে- দরিদ্রদের ডিজিটাল তথ্য ভান্ডার (নতুন দরিদ্রসহ) তৈরি; সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে নতুন দরিদ্রদের অন্তর্ভুক্ত করা; সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি থেকে পেনশন, সঞ্চয়পত্রের সুদ, বিভিন্ন ধরনের বৃত্তি বাদ দেয়া; শহর দরিদ্র বিশেষত যারা বস্তিতে আছে, তাদের জন্য কর্মসূচি গ্রহণ; এনএসএস–এর সুপারিশগুলো সংযুক্ত করে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির নতুন বিন্যাস; ক্ষুদ্র ও মধ্যম আকারের উদ্যোক্তাদের প্রণোদনার ব্যবস্থা; সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় পিছিয়ে থাকা ব্যক্তিদের করোনা মোকাবেলার জন্য কীভাবে শ্রম বাজারে নিয়ে আসা যায় তার জন্য কর্মপরিকল্পনা এবং রোডম্যাপ প্রণয়ন; ওএমএস–এর কার্যক্রম বাড়ানো; মূল্যের স্থিতিশীলতা ধরে রাখার জন্য স্বল্পমেয়াদীর (বৃহত্তর পর্যবেক্ষণ, রেশনিং ইত্যাদি) পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী (মূল্য কমিশন প্রতিষ্ঠা) পদক্ষেপ গ্রহণ; এবং কর্মসূচির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ইত্যাদি।